সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর গলাচিপায় কলা চাষে অল্প পুঁজিতে অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক আব্দুস সালাম চুন্নু মোল্লা (৭০)। পৌরসভার শান্তিবাগে নিজের পৈত্রিক ৯০ শতক অ-কৃষি জমিতে ষাট হাজার টাকা ব্যয়ে এক বছর সময় নিয়ে নিজের উদ্যোগ ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সাত শত কলা গাছের চারা রোপন করে তিনি গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রজাতির কলার বাগান। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অধিকাংশ গাছে ফল ধরেছে। এখন তার মুখে ফুটে উঠেছে সুখের হাসি। প্রতি নিয়ত আশপাশের গ্রাম থেকে বিভিন্ন মানুষ দেখতে আসেন এই বাগান। অনেকে আবার তার কাছ থেকে বাগান করার পরামর্শও নিচ্ছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে কলা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বছরে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন এই কৃষকের। সরিজমিন দেখা যায়, গলাচিপা পৌরসভার শান্তিবাগে ওয়াবদা বেড়িবাঁধের বাহিরে আব্দুস সালাম চুন্নু মোল্লা গড়ে তুলেছেন সাগর, শবরী, চম্পা ও কাঁচাকলা প্রজাতির কলার বাগান। নিজের শ্রম ও লোকবল নিয়োগ করে একটি লাভজনক কলাবাগান গড়ে তুলেছেন তিনি। বাহির থেকে বিভিন্ন পশু কিংবা অন্য কেউ যাতে গাছের অনিষ্ট করতে না পারে সেজন্য বাগানটির চারদিক দিয়ে তারকাটা দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত গাছে সার ও কীটনাশক প্রয়োগসহ গাছের পরিচর্যা করছেন তিনি। অধিকাংশ গাছেই ফল ধরেছে। জানা যায়, গত বছর আষাঢ় মাসের শুরুর দিকে নিজের পৈত্রিক ৯০ শতক জমিতে সাত শত কলা গাছের চারা তিনি রোপন করেছেন। বাগানটি তৈরি করতে গত এক বছরে ষাট হাজার টাকা ব্যয় করেছেন এই কৃষক। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে কলা ও চারা কলা গাছ বিক্রি করে তিনি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হতে চান। পরিবার ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিটামিনের অভাব দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। ঝড়-বন্যার কবলে বাগানের সামান্য ক্ষতি হলেও সার্বক্ষণিক সার, কীটনাশক ও পরিচর্যার মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ঝড়-বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিলম্ব হলেও বাগানের অধিকাংশ গাছে ফুল-ফল ধরতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকলে অচিরেই সম্ভাবনাময় স্বপ্ন পুরণ হবে বলে আশা করছেন তিনি। বর্তমানে তার বাগানে যে পরিমাণ কলা গাছের চারা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে একাধিক বাগান করা সম্ভব। তাই তিনি বাগান থেকে চারাগাছ বিক্রি করা শুরু করেছেন। আব্দুস সালাম চুন্নু মোল্লা বলেন, ‘আমি প্রথমে শখের বশে কলার বাগান তৈরি করি। ঝড়-বন্যার মধ্যেও বাগানটি টিকে আছে। গাছে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করেছে। অনেকে বাগান থেকে চারা গাছ কিনে নিচ্ছে। এখন আমি বাণিজ্যিকভাবে কলা ও চারা গাছ বিক্রি করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। আশা করছি বাগান থেকে বছরে পাঁচ লাখ টাকা আয় করা যাবে। এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আমাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন।’ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ্রাবন্তী মন্ডল বলেন, ‘আমি চুন্নু মোল্লার কলা বাগান একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি এবং পাশাপাশি তাকে সবজির বাগান করারও পরামর্শ দিচ্ছি।’