গত ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান খুনি হাসিনা। এর পর তার ‘কণ্ঠে’ একাধিক ফোনালাপ ও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিগত ছয় মাসে প্রকাশিত হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ ফোনালাপ ও বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে নানা ধরণের সমালোচনা রয়েছে ।অনেকে বলছেন , এগুলো এআই দিয়ে তৈরি। কাজেই হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ বক্তব্য ও ফোনালাপের আদৌ কোনো সত্যতা নেই।আসলে ব্যাপারটা কি ?
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকে ভারতে অবস্থান করছেন হাসিনা ।ভারতে তার প্রকৃত অবস্থান এখনো পরিষ্কার করেনি সে দেশের সরকার।এদিকে হাসিনা কন্যা পুতুল দিল্লিতে থেকেও স্বাভাবিক মেলামেশা করতে পারছেন না তার মা ও খালা রেহানার সাথে।পুত্র জয় ,সেও মা হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এমন কোনো তথ্য নেই ।তাছাড়া সন্দেহের পারদ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পেছনে বড়ো একটি কারণ হচ্ছে, দেশ ছাড়ার পর শুধুই অডিও কল ! ভিডিও কলে কেন সামনে আসছেন না হাসিনা ? তবে তিনি কি ডুমুরের ফুল ? নাকি তার এ সব অডিও বার্তা কেবলই এআই প্রযুক্তি নির্ভর ছাড়া আর কিছু না ?
ভারত সরকারের কাছে হাসিনা প্রতিদিন সোনার ডিম পাড়া একটি মূল্যবান হাঁস। এমত অবস্থায় হাসিনাকে অবাধ্য হয়ে উঠতে দেবে ভারত এটা আকাশ কুসুম কল্পনা। সুতরাং হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ বক্তব্য ও ফোনালাপ ধরে নিতে হবে এটা "র" এর পাতা ফাঁদ।দেশের ছাত্র জনতা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা "র" এই ভয়ঙ্কর পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন না তো ?
৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন।অভ্যুত্থান পরবর্তী সময় দুনিয়া জুড়ে সহিংসতা লুটপাট হত্যা ধর্ষণ ইত্যাদি হয়ে থাকে ।কিন্তু বাংলাদেশে তেমন কিছু হয়নি।বাংলাদেশিরা যে সহনশীল জাতি এটাই তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
একসময় ভাবা হত, খুনি হাসিনা পতনের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা কেমন হবে বাংলাদেশ ? হয়তো রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে সর্বত্র ।দীর্ঘ দিনের ক্ষোভের আগুনে জ্বলবে ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার দোসররা ।গৃহ যুদ্ধে লিপ্ত লিপ্ত হবে ভুক্তভোগীরা।কিন্তু বাস্তবে কি হয়েছিল ?
২০২৪ সালের ৫ থেকে ৮ আগস্ট দেশে কোনো সরকার ছিল না। পুলিশ প্রশাসনের প্রায় সবাই আত্মরক্ষায় গর্তে লুকিয়ে ছিল।দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব তেমন কেউ কাঁধে তুলে নেননি ।এদিকে অভ্যুত্থান পরবর্তী সম্ভাব্য সরকার প্রধান ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। জাতীয় জীবনের এই চরম ও পরম দুর্যোক পূর্ণ মুহূর্তে দেশ ছিল একেবারে শান্ত।কেউ কোনো অরাজকতার চেষ্টা করে নি ।ছিলোনা কোনো হানা হানি, দলাদলি।এটা পৃথিবীর ইতিহাসে একেবারেই বিরল ঘটনা।ঐ দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে আমরা গর্বিত ।
কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পরে এ কি দেখছে জাতি ? কি বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে গোটা বিশ্বে ? দেশে রয়েছে জনগণ সমর্থিত সরকার ।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন অনেকটা সক্রিয়।এমত অবস্থায় ছাত্র জনতার ব্যানারে আইন নিজ হাতে তুলে নেয়ায় সরকারের অস্তিত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে না তো ? ঠান্ডা মাথায় ছাত্র জনতা ষড়যন্ত্রকারী আওয়ামীলীগ ও " র " এর ফাঁদে পা দিচ্ছে না তো ?
বিগত ১৫/১৬ বছরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা , অর্থনীতি সহ প্রতিটি সেক্টর ধ্বংস করেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ।বিশাল এই ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে এখন দেশ গড়ার সময়।দেশের মানুষকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা ,সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা,অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি ,ভোটাধিকার ,গণতন্ত্র ইত্যাদি ফিরিয়ে দিতে কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করা এখন সময়ের দাবি।ছাত্র জনতা কি পারবেন সহিংসতা পরিহার করে দেশ গড়ার এ মহতী উদ্যোগে অন্তবর্তী সরকারের পাশে থাকতে ?
মনে রাখতে হবে ক্রোধ কেবল ক্রোধেরই জন্ম দেয়।সত্য উন্মোচনে ইতিহাস বড় বেশি নিষ্ঠুর।কাউকে ছাড় দেয় না।প্রাকৃতিক নিয়মে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইতিহাস একসময় ছুটে চলে তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে ।
শুধু আওয়ামী দুঃশাসনের শেষ চিহ্ন মুছে দিলেই শোষণ বঞ্চনা ও দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এমনটি ভাবার কারণ নেই । যতদিন গণঅভ্যুত্থানের শক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে সরকার ব্যবস্থা বদলে দেয়া না যায়।
তবেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ । মুক্তির পথ খুঁজে পাবে দেশের নিষ্পেষিত জনগণ ।
লেখক : প্রবাসী সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সম্পাদক tv19online.
গত মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়, ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সভাপতি বুধবার রাতে ছাত্রদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন।এই খবরটি প্রকাশের পর থেকেই স্ফুলিঙ্গের মতো ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে দেশের ছাত্র জনতা মাঝে ।
বিগত ছয় মাসে প্রকাশিত হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ ফোনালাপ ও বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে নানা ধরণের সমালোচনা রয়েছে ।অনেকে বলছেন , এগুলো এআই দিয়ে তৈরি। কাজেই হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ বক্তব্য ও ফোনালাপের আদৌ কোনো সত্যতা নেই।আসলে ব্যাপারটা কি ?
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকে ভারতে অবস্থান করছেন হাসিনা ।ভারতে তার প্রকৃত অবস্থান এখনো পরিষ্কার করেনি সে দেশের সরকার।এদিকে হাসিনা কন্যা পুতুল দিল্লিতে থেকেও স্বাভাবিক মেলামেশা করতে পারছেন না তার মা ও খালা রেহানার সাথে।পুত্র জয় ,সেও মা হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এমন কোনো তথ্য নেই ।তাছাড়া সন্দেহের পারদ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পেছনে বড়ো একটি কারণ হচ্ছে, দেশ ছাড়ার পর শুধুই অডিও কল ! ভিডিও কলে কেন সামনে আসছেন না হাসিনা ? তবে তিনি কি ডুমুরের ফুল ? নাকি তার এ সব অডিও বার্তা কেবলই এআই প্রযুক্তি নির্ভর ছাড়া আর কিছু না ?
ভারত সরকারের কাছে হাসিনা প্রতিদিন সোনার ডিম পাড়া একটি মূল্যবান হাঁস। এমত অবস্থায় হাসিনাকে অবাধ্য হয়ে উঠতে দেবে ভারত এটা আকাশ কুসুম কল্পনা। সুতরাং হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ বক্তব্য ও ফোনালাপ ধরে নিতে হবে এটা "র" এর পাতা ফাঁদ।দেশের ছাত্র জনতা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা "র" এই ভয়ঙ্কর পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন না তো ?
৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন।অভ্যুত্থান পরবর্তী সময় দুনিয়া জুড়ে সহিংসতা লুটপাট হত্যা ধর্ষণ ইত্যাদি হয়ে থাকে ।কিন্তু বাংলাদেশে তেমন কিছু হয়নি।বাংলাদেশিরা যে সহনশীল জাতি এটাই তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
একসময় ভাবা হত, খুনি হাসিনা পতনের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা কেমন হবে বাংলাদেশ ? হয়তো রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে সর্বত্র ।দীর্ঘ দিনের ক্ষোভের আগুনে জ্বলবে ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার দোসররা ।গৃহ যুদ্ধে লিপ্ত লিপ্ত হবে ভুক্তভোগীরা।কিন্তু বাস্তবে কি হয়েছিল ?
২০২৪ সালের ৫ থেকে ৮ আগস্ট দেশে কোনো সরকার ছিল না। পুলিশ প্রশাসনের প্রায় সবাই আত্মরক্ষায় গর্তে লুকিয়ে ছিল।দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব তেমন কেউ কাঁধে তুলে নেননি ।এদিকে অভ্যুত্থান পরবর্তী সম্ভাব্য সরকার প্রধান ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। জাতীয় জীবনের এই চরম ও পরম দুর্যোক পূর্ণ মুহূর্তে দেশ ছিল একেবারে শান্ত।কেউ কোনো অরাজকতার চেষ্টা করে নি ।ছিলোনা কোনো হানা হানি, দলাদলি।এটা পৃথিবীর ইতিহাসে একেবারেই বিরল ঘটনা।ঐ দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে আমরা গর্বিত ।
কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পরে এ কি দেখছে জাতি ? কি বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে গোটা বিশ্বে ? দেশে রয়েছে জনগণ সমর্থিত সরকার ।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন অনেকটা সক্রিয়।এমত অবস্থায় ছাত্র জনতার ব্যানারে আইন নিজ হাতে তুলে নেয়ায় সরকারের অস্তিত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে না তো ? ঠান্ডা মাথায় ছাত্র জনতা ষড়যন্ত্রকারী আওয়ামীলীগ ও " র " এর ফাঁদে পা দিচ্ছে না তো ?
বিগত ১৫/১৬ বছরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা , অর্থনীতি সহ প্রতিটি সেক্টর ধ্বংস করেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ।বিশাল এই ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে এখন দেশ গড়ার সময়।দেশের মানুষকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা ,সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা,অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি ,ভোটাধিকার ,গণতন্ত্র ইত্যাদি ফিরিয়ে দিতে কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করা এখন সময়ের দাবি।ছাত্র জনতা কি পারবেন সহিংসতা পরিহার করে দেশ গড়ার এ মহতী উদ্যোগে অন্তবর্তী সরকারের পাশে থাকতে ?
মনে রাখতে হবে ক্রোধ কেবল ক্রোধেরই জন্ম দেয়।সত্য উন্মোচনে ইতিহাস বড় বেশি নিষ্ঠুর।কাউকে ছাড় দেয় না।প্রাকৃতিক নিয়মে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইতিহাস একসময় ছুটে চলে তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে ।
শুধু আওয়ামী দুঃশাসনের শেষ চিহ্ন মুছে দিলেই শোষণ বঞ্চনা ও দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এমনটি ভাবার কারণ নেই । যতদিন গণঅভ্যুত্থানের শক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে সরকার ব্যবস্থা বদলে দেয়া না যায়।
সুতরাং আবেগের বশবর্তী না হয়ে বিবেকের কাছে ফিরে আসুন। দেশের মানুষের মনের কথা কান পেতে শুনুন।বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন দেশের সাধারণ মানুষের প্রকৃত কষ্টের কথা।জাতীয় শত্রু খতমের তীব্র ইচ্ছাকে একমাত্র মুক্তির পথ না ভেবে ওই শক্তি টুকু দেশ গড়ার কাজে ব্যবহার করুন ।
তবেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ । মুক্তির পথ খুঁজে পাবে দেশের নিষ্পেষিত জনগণ ।
লেখক : প্রবাসী সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সম্পাদক tv19online.