এক্সক্লুসিভ ০৭ আগস্ট ২০২৪

এ দিনটির অপেক্ষা করেছিলাম দীর্ঘকাল : সারওয়ার-ই আলম

post

আজকের এ দিনটির জন্য মনে মনে অপেক্ষা করেছিলাম দীর্ঘকাল। হ্যাঁ, এ দিনটির জন্য। আজ গর্বে বুকটা ভরে যাচ্ছে। আনন্দে চোখে পানি চলে এসেছে। আমাদের কী যে সৌভাগ্য আহা, আজ আমরা এমন একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বকে আমাদের জাতির অভিভাবক হিসেবে পেলাম যিনি শুধু নোবেল পুরস্কারই অর্জন করেননি, যাঁর জন্য সম্মানের আসন নির্ধারিত থাকে বিশ্বের বড় বড় আসরে।

 বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র, শিক্ষক, গবেষকেরা গভীর মনযোগ দিয়ে শ্রবণ করেন যাঁর বক্তব্য। বিশ্বের ২০টি দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাঁকে দেওয়া হয়েছে ৫০টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী। আমেরিকাসহ বিশ্বের ১শ'রও অধিক দেশে যাঁর উদ্ভাবিত মাইক্রোফাইন্যান্স ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষকে স্বাবলম্বী করার কাজে। আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেলসহ ২৬টি দেশ থেকে যিনি পেয়েছেন ১১৩টি আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড, যার মধ্যে রয়েছে ১০টি দেশের রাষ্ট্রীয় পদক। যাঁকে হয়রানির না করার জন্য এইতো সেদিন বিশ্বের ১৭৬ জন রাষ্ট্রপ্রধান ও নোবেলজয়ী বিবৃতি দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ এরকম একজন কৃতী সন্তান আর কী দ্বিতীয়টি পেয়েছে গত সহস্র বছরে! অথচ এই মানুষটিকে আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতই না অপমান করলেন! জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে আখ্যায়িত করলেন 'গরীবের রক্তচোষা সুদখোর' হিসেবে। তিনি বললেন, ব্যস, তাঁর নেতা-কর্মীরা পরম আনন্দের সঙ্গে লুফে নিলেন একথা। দেশে ও প্রবাসে আওয়ামী লীগের শিক্ষিত-অশিক্ষিত কর্মী-সমর্থকদের কাছে ডক্টর ইউনূস হয়ে গেলেন ' সুদখোর'।

 আওয়ামী লীগ সরকারের সাজানো মামলায় বছরের পর বছর তাকে চরম হয়রানি করা হলো। বিচারের নামে নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতের দুয়ারে দুয়ারে তাকে ঘোরানো হলো শুধু প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে।তাঁর নিজের গড়া প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল পর্যন্ত করিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। খবরের কাগজে সেসব খবর পড়েছি আর কষ্ট পেয়েছি। নিজেই অপমানিত বোধ করেছি। প্রতিবাদে ফুঁসেছি। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। আদালতকে ব্যবহার করে তাঁর তিল তিল করে গড়া প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁকে বের করে দেওয়ার ঘটনা পর্যন্ত ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ ; যে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশকে চিনিয়েছে বিশ্ব-আসরে। কতটা অকৃতজ্ঞ আমরা, ছিঃ, কতটা! 

আজ জাতি সব অন্যায় ও অবিচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিল এই মানুষটিকে সরকার প্রধান হিসেবে মনোনীত করে। জাতির আজ দায় মোচন হলো। জাতি মুক্তি পেলো এক চরম গ্লানি থেকে। অভিভাবদন হে সাহসী তারুণ্য, অভিভাবদন। তোমাদের দেশপ্রেম, মেধা, বুদ্ধিমত্তা ও দূরদর্শিতা দেখে বারবার শুধু বিস্মিত হই। ভাবি এই দুর্বার আত্মবিশ্বাস, এই নিখাদ দেশপ্রেম, অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে এই ইস্পাতকঠিন প্রত্যয় কোথায় পেলে তোমরা! ভালবাসা হে তারুণ্য, ভালবাসা। তোমরা গড়ে নাও আগামীর বাংলাদেশ প্রজ্ঞা ও প্রত্যয়ে। জয় হোক, সেই দুনিয়া কাঁপানো তেইশ দিনের বিপ্লবের মতো দুনিয়াজোড়া জয়। অভিনন্দন ডক্টর ইউনূস, প্রাণঢালা অভিনন্দন। এই পথহারা জাতিকে আপনি দিন পথের দিশা, মুক্তির আনন্দ, গণতন্ত্রের স্বাদ এবং সুশাসন ও স্বনির্ভরতার নিশ্চিত ঠিকানা। 

সারওয়ার-ই আলম ইলফোর্ড, লণ্ডন ৬ই আগস্ট ২০২৪

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner