এক্সক্লুসিভ ০৭ আগস্ট ২০২৪

জাতির জনকের ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার স্পর্ধা দেখিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা : সারওয়ার-ই আলম

post

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার স্পর্ধা দেখিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা। বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের অংশ বঙ্গবন্ধু যাদুঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। 

এ দুটি ঘটনা শুধু নিন্দনীয়ই নয়, চরম অমার্জনীয় অপরাধও। বাংলাদেশের গত পাঁচ দশকের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল তাঁরা পরিষ্কার বুঝতে পারছেন এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা কারা ঘটিয়েছে এবং কেন ঘটিয়েছে। ছাত্র-জনতার দুনিয়া কাঁপানে তেইশ দিনের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার দূরভিসন্ধি নিয়ে এক শ্রেণির কুচক্রী যে ছাত্র-জনতার বেশে এসব ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তা রাজনীতি পর্যবেক্ষক ও সমাজ সচেতন মানুষের বুঝতে বাকী থাকার কথা নয়।উদ্দেশ্য একটাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে এমনভাবে উপস্থাপন করা যা দেখে তারা ছাত্রদের ওপর থেকে তাদের এতদিনকার সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবে।

 এই নীল নকশার আরেকটি অংশ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানো। সারাদেশে নির্মম-নিষ্ঠুর কায়দায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং লুটপাট করা হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই জাতিকে দেখানো, দেখো তোমরা যাদেরকে নব প্রজন্মের যোদ্ধা বলছো তারা কত জঘণ্য। এবং হয়েছোও তাই। দুষ্কৃতিকারীরা অনেকাংশেই সফল হয়েছে বলা যায়। কারণ সাধারণ মানুষ, যাঁরা শান্তি পছন্দ করেন, যাঁরা সুশাসন ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ চান তাঁরাতো এসব প্রতিহিংসামূলক কার্যকলাপ কখনোই মেনে নিতে পারবেন না।

 সাধারণ মানুষ এখন ফেসবুকে ছাত্র-জনতার তীব্র সমালোচনা করে পোস্ট দিচ্ছেন। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা করছেন। যে কোনো বিবেকবান সচেতন নাগরিক তাই করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমি মনে করি এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার লেশমাত্র যোগসূত্র নেই। এসবই সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীদের নীল নকশার অংশ। এখানে কোনো একটি গোয়েন্দা সংস্থারও জড়িত থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের নাজুক অবস্থার সুযোগ নিয়ে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছেন। বঙ্গবন্ধুপ্রেমি দেশের কোটি কোটি মানুষ ও লক্ষ লক্ষ হিন্দু সম্প্রদায়কে ছাত্রদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। নিঃসন্দেহে এটি একটি সুপরিকল্পিত ও সুদূরপ্রসারী নীল নকশার অংশ।

 অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যে কোনো মূল্যে এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। ফেসবুক পোস্টের ছবি, ভিডিও ও স্থাপনাগুলোর সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এমনকি এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে কোনো পথভ্রষ্ট শিক্ষার্থীও যদি অংশ নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধেও কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে নিজে অন্যায় করে সমাজে কখনোই সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় না। আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আজ রাষ্ট্রপতি ও তিন বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটি কথা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছেন, তা হলো তাদের লক্ষ্য হলো ফ্যাসিবাদের সাথে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শাস্তির ব্যবস্থা করা, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে নয়। এরচেয়ে সুস্পষ্ট বার্তা আর কী হতে পারে! আশা করি ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই অনতিবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ বিচার নিশ্চিত করবেন।


আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner