টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নবনির্মিত কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান।
মেরি ড্রিসকল হাউস নামের দৃষ্টিনন্দন নতুন ভবনে ১, ২, ৩ ও ৪ বেড রুমের ১৯ টি ফ্ল্যাট রয়েছে। উদ্বোধনের পর নির্বাহী মেয়র তার সার্জারিতে আসা এমন দুটি পরিবারের সাথে মিলিত হন ও তাদের ঘর পরিদর্শন করেন। তাদের একজন স্বাস্থ্যগত কারণে ঘর প্রাপ্তির অগ্রাধিকারের আওতায় ছিলেন এবং অন্য পরিবার পুরোনো ঘরে মারাত্মক ঝুকির মধ্যে বসবাস করছিলেন। নবনির্মিত এই ভবনে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধার নতুন ফ্ল্যাট পেয়ে পরিবারগুলো অসম্ভব খুশী ও কৃতজ্ঞ।
মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, “প্রতি সপ্তাহে শুক্র ও সোমবার নিয়মিত দু’টি সার্জারি করার মাধ্যমে মাসে প্রায় ৩ থেকে ৪ শ’ মানুষের সঙ্গে আমি সরাসরি কথা বলি। এসব মানুষের বেশীর ভাগেরই সমস্যা হাউজিং।”
তিনি বলেন, আমাদের মেয়াদকালে ৪ হাজার সোস্যাল হাউজ ডেলিভারির যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছি, সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা দিন—রাত কাজ করে যাচ্ছি। বারার জনগণের জন্য এফোর্ডেবল রেন্টে (সাশ্রয়ী ভাড়ায়) ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে আমাদের অঙ্গীকার অনুযায়ী আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বিল্ডিং উদ্বোধন করা হয়েছে।”
“কাউন্সিলের নিজস্ব ভূমিতে নতুন ১২টি বিল্ডিং প্রজেক্টের টেন্ডার চূড়ান্ত হওয়ার পথে” উল্লেখ করে নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান তার আশাবাদের কথা জানান।
মেরি ড্রিসকল হাউস নামকরণের পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস। ১৮৮৮ সালের ম্যাচগার্লস স্ট্রাইক নামে পরিচিত যে ধর্মঘট হয়েছিলো, তাঁর নেতৃত্ব দিয়েছিলো বো—তে অবস্থিত ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে কর্মরত মহিলা এবং কিশোরীরা, যারা ফ্যাক্টরির খারাপ অবস্থা, কম বেতন ও সাদা ফসফরাস ব্যবহারের কারণে গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার মুখোমুখি হয়ে ফুঁসে উঠেছিলেন।
মেরি ড্রিসকল ১৮৭৪ সালে লাইমহাউসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্ট্রাইক কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে কারখানার পরিচালকদের সাথে আলোচনা অংশ নিয়েছিলেন। ম্যাচগার্লস স্ট্রাইক ছিল কাজের অধিকারের জন্য একটি যুগান্তকারী আন্দোলন, যা বিশ্বব্যাপী শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলির মধ্যে একটি। ম্যাচগার্ল স্ট্রাইকের ‘মুখ’ হয়ে ওঠা মেরি ড্রিসকল এর নামে কাউন্সিলের নতুন এই ভবনের নামকরণ করা হয়। তাঁর পরিবারের সদস্যরাও আবাসিক ভবনের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতায় নির্বাহী মেয়রের সাথে যোগ দেন।