সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর গলাচিপায় নিখোঁজের ১০ দিনেও সন্ধান মেলেনি অপু রানী (১৬) নামের এক স্কুল ছাত্রীর। অপু রানী হচ্ছেন উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের কেশব চন্দ্র দাসের মেয়ে। তিনি গলাচিপা সরকারি টেক্সটাইল স্কুল এন্ড কলেজের ২০২৩ সেশনের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। তার রোল নম্বর ৫৪। অপু রানীর সন্ধান চেয়ে তার মা মালতী রানী গলাচিপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। যার ডায়েরী নম্বর ৭০৭, তারিখঃ ১৭/০২/২০২৪। নিখোঁজের ১০ দিনেও অপু রানীর সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজ ডায়েরি ও অপু রানী মা মালতী রানীর কাছ থেকে জানা যায়, স্বরেস্বতী পূজার দিন সকালে পূজার অঞ্জলী নেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। দুপুর পেরিয়ে গেলেও অপু রানী বাড়ি না ফেরায় তার খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সন্ধ্যায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়। তিনি আরো বলেন, পরে দুলাল দাস নামের একজন লোক একটি বাংলালিংক নম্বর (০১৯৩৬৯৪১২৮১) থেকে ফোন করে বলে অপু পটুয়াখালীর ছোট বিঘাই ৮ নম্বর ওয়ার্ডে আছে। অপু রানীর মা মালতী রানী ও বাবা কেশব চন্দ্র দাস পটুয়াখালীর ছোট বিঘাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হাওলাদার ও শাহ আলম চৌকিদারের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, আপনারা মামলা তুলে নিলে আপনাদের মেয়ে বেরিয়ে যাবে। এ বিষয়ে ছোট বিঘাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হাওলাদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ঐ বাড়িতে লোক পাঠিয়েছি এবং দেখব। এ বিষয়ে গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, আমি ছোট বিঘাই চেয়ারম্যানকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি। এ বিষয়ে গলাচিপা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফেরদাউস আলম খান বলেন, অপু রানী নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরী থানায় করা হয়েছে। তাকে উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।
গলাচিপায় আইপিএম পদ্ধতিতে বেগুন উৎপাদন শীর্ষক কৃষক মাঠ দিবস
পটুয়াখালীর গলাচিপায় আইপিএম পদ্ধতিতে বেগুন উৎপাদন শীর্ষক কৃষক মাঠ দিবস সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের ডাকাতিয়া সেন্টার বাজারের গ্রামর্দ্দন গ্রামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফিড দ্য ফিউচার আইপিএম অ্যাক্টিভিটির আয়োজনে এবং ইউএসএআইডি মিশন এর অর্থায়নে সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে (আইপিএম) বিষমুক্ত বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কৃষক মাঝে এ সভার আয়োজন করা হয়। প্রথমবারের মতো বেগুন চাষে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি ব্যবহার করে সফলতা পাচ্ছে প্রান্তিক কৃষকরা। ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে রাসায়নিক কীটনাশকের পরির্বতে ব্যবহার করা হচ্ছে সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ, মালচিং পেপার, জৈব বালাইনাশক-ইকোমেকস, বায়োশিল্ড, বায়োএনভির ইত্যাদি। প্রকল্পভুক্ত কৃষকেরা নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন্য বিনামূল্যে জৈব বালাইনাশক, সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ ও হলুদ আঠালো ফাঁদ পাচ্ছেন। এসব ব্যবহার পদ্ধতির ওপর কৃষক-কৃষাণীদের সার্বিক দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শেখানো হয়েছে ফাঁদ স্থাপনের কলা-কৌশল। কৃষকরা জানান, ক্ষেতে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় খরচ অনেক কম হয়েছে। এমনকি ফলনও অনেক সন্তোষজনক হয়েছে। অল্প খরচে এসব সবজি উৎপাদন করতে পেরে খুশি কৃষক। পানপট্টি ইউনিয়নের গ্রামর্দ্দন গ্রামের বেগুন চাষি মিন্টু খান বলেন, আমি জমিতে নিরাপদ উপায়ে বেগুন চাষ করেছি। সেখানে কোনো ধরনের রাসায়নিক স্প্রে করিনি, ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আগামীতেও নিরাপদ উপায়ে ফসল উৎপাদন বাড়াব। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আকরাম হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইপিএম অ্যাক্টিভিটির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. রেজাউল ইসলাম, পানপট্টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. মাসুদ রানা, আইপিএম অ্যাক্টিভিটি এর প্রতিনিধি মো. হেদায়তুল্লাহ, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা রাকিব হাসান, মাঠ সহায়ক মো. মাহবুব আলম, মো. মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ। এ সময় প্রধান অতিথি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বলেন, পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে বেগুন উৎপাদনের জন্য পানপট্টি ইউনিয়নে বর্তমান ফলোআপ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে সম্পূর্ণ আইপিএম পদ্ধতি ব্যবহার করেই বেগুন উৎপাদন করা হচ্ছে। নিরাপদ উপায়ে বেগুন চাষের জন্য কৃষকদের মোটিভেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন কৃষক সমাবেশের আধুনিক জৈব প্রযুক্তি সম্পর্কে জানানো হচ্ছে এবং জনগণকেও সচেতন করা হচ্ছে।
পটুয়াখালীর গলাচিপায় অবৈধ জাল অপসারণে বিশেষ কম্বিং অপারেশন শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ অপারেশন পরিচালনা করা হয়। দেশের মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল অপসারণে বিশেষ কম্বিং অপারেশন শুরু করেছে সরকার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় চলতি বছর ১৭টি জেলায় বেহুন্দী জাল, কারেন্ট জালসহ সব ধরনের অবৈধ জাল অপসারণে ৩০ দিনব্যাপী বিশেষ এ অভিযান পরিচালনা করছে নৌ-বাহিনী, উপজেলা মৎস্য বিভাগ ও গলাচিপা থানা পুলিশ। দি প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস্, ১৯৮৫ অনুযায়ী সরকার ২০১৩ সালে মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, মশারি জাল, চরঘেরা জাল, বেড় জাল, কারেন্ট জাল প্রভৃতি ক্ষতিকারক জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এবং ইলিশ আহরণের জালের ফাঁস ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ২ দশমিক ৬ ইঞ্চি নির্ধারণ করেছে। মৎস্য সম্পদের জন্য ক্ষতিকর এসব জালের ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে জাটকাসহ সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ডিম, রেণু ও পোনা বিনষ্ট হবে এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি জলজ জীববৈচিত্র নষ্ট হবে। সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধঘোষিত এসব জাল ব্যবহারকারীকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদ- অথবা উভয় দ-ে দ-িত করার বিধান রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী বলেন, রামনাবাদ, বুড়া গৌরঙ্গ, আগুনমুখা, তেতুলিয়া নদীতে দিনভর কম্বিং অপারেশন পরিচালনা করে বিভিন্ন প্রজাতীর জাল আটক করা হয়েছে। পরে গলাচিপা থানা পুলিশের সহায়তায় গলাচিপা ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায় আটক জালগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ অভিযান অব্যহত থাকবে।