প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে প্রায় ১ মিলিয়ন দেশি বিদেশী পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে অনিন্দ্যসুন্দর সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ।অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত এই ছয় মাস ভ্রমণের জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে নিরাপদ পর্যটন মৌসুম হিসাবে ধরা হয়। এ সময় টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাত্রী পারাপারে ৬/৭ টি জাহাজ চালু থাকে।প্রতিদিন টেকনাফ থেকে সকাল ৯.০০ ও ৯.৩০ মিনিটে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে জাহাজ ছেড়ে যায়।সেখানথেকে ফিরে আসে বিকাল ৩.০০ ও ৩.৩০ মিনিটে।পারাপারে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন ঘন্টা।কিন্তু সম্ভাবনাময় এই পর্যটন এলাকায় বসবাসরত স্থানীয় অধিবাসীরা ভীষণ অবহেলিত।
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ১৯৮৩ সালে ইউনিয়ন হিসেবে উন্নীত হয়।বিরল এই দ্বীপে রয়েছে একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।সেখানে বসবাস করেন প্রায় ৭৩০০ জন স্থানীয় অধিবাসী ।এদের অধিকাংশই মৎস শিকার ,শুটকি ,কৃষিকাজ,গবাদি পশুপালন ও সামান্য পর্যটন সেবার উপর নির্ভরশীল।দ্বীপের মধ্য ও দক্ষিণের এলাকা মূলত কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত ।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের আবাসনের জন্য কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্মাণ করেছে রেস্টহাউজ।এ ছাড়া অনেক ব্যক্তি মালিকানাধীন হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে সেখানে ।কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য যে এ ব্যবসায় স্থানীয় আদি আদিবাসীদের নেই তেমন কোনো ভূমিকা।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই দ্বীপে চলাচলের জন্য রয়েছে ভ্যান ,অটো রিক্সা,ট্রলার ও স্পিড বোট ।এ সব যানবাহনে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা যানবাহনের গায়ে ঝুলিয়ে রাখা বাধতামূল।কেউ এ আইন অমান্য করছে কিনা তা অনেক সময় তদারকি করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নানা জাতের তাজা সামুদ্রিক মাছ, অক্টোপাস ,শুটকি, লাল ও বিভিন্ন রঙের, হরেক রকমের কাঁকড়া পাওয়া যায়। এ ছাড়া চোখে পড়ে শতাধিক প্রজাতির পাখি।এখানে প্রায় প্রতিটি রেস্ট হাউসে খাবার ব্যবস্থা থাকে। তাছাড়া ছোট ছোট রেস্টুরেন্ট তো আছেই। দ্বীপের প্রতিটি রিসোর্টের সামনে সন্ধ্যার পর বসে টাটকা সামুদ্রিক মাছের বারবিকিউ উৎসব। এ এক অন্য রকমের আয়োজন।
টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আসার সময় অথৈ সমুদ্রের বিশাল জলরাশি আর জাহাজের পেছনে অতন্দ্র প্রহরীর মতো ঝাঁকে ঝাঁকে গাংচিল উড়ে চলার দৃশ্য সবার মন কেড়ে নেয়।
https://youtu.be/1yO5CX7PaZw সেন্টমার্টিন দ্বীপের আদিবাসীদের করুন ইতিহাস