শীত মৌসুম চলে এসেছে। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা কম থাকবে বলে আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছে। এই ঠান্ডা আবহাওয়া প্রবীণ ব্যক্তি, শিশু, এবং যাদের শ্বাসকষ্ট বা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা রয়েছে তাদের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। তাই টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সবাইকে নিজে উষ্ণ থাকার পাশাপাশি পরিবার, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের, বিশেষ করে যাদের চলাচল সীমিত বা স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে - তাদের খোঁজখবর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও প্রবীণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকে, তাহলে সাহায্যের জন্য টাওয়ার হ্যামলেটস্ কানেক্ট - এ ০৩০০ ৩০৩ ৬০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে, ওয়ার্ম হোম ডিসকাউন্ট স্কিম-এর আওতায় শীত মৌসুমের জন্য বিদ্যুৎ বিলে ১৪০ পাউন্ড পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যাবে। তবে এই টাকা সরাসরি দেওয়া হবে না, বরং বিদ্যুৎ বিলে একবারেই ছাড় হিসেবে যোগ হবে। যারা পেনশন ক্রেডিটের গ্যারান্টি ক্রেডিট উপাদান পান তারা কোর গ্রুপ হিসেবে যোগ্য। এছাড়া কম আয়ের বাসিন্দারা, যারা তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহকারীর নির্ধারিত মানদণ্ড পূরণ করেন, তারাও ব্রডার গ্রুপের আওতায় সুবিধা পেতে পারেন। প্রি-পে বা পে-এজ-ইউ-গো মিটার ব্যবহার করলেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে - বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জানিয়ে দেবে কীভাবে ছাড় পাওয়া যাবে।
কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে শীতকালে উষ্ণ থাকার, ভালো থাকার নানা টিপস রয়েছে। শরীর গরম রাখা এবং সুস্থ থাকা অত্যন্ত জরুরি, কারণ শীতকালে সর্দি-কাশি, ফ্লু, নিউমোনিয়া, স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। বারা জুড়ে বিভিন্ন ওয়ার্ম হাব খোলা রয়েছে যেখানে উষ্ণ পরিবেশ, গরম পানীয়, বিস্কুট এবং বিভিন্ন সহায়তামূলক পরিষেবার দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।
ঘরের ভেতরে হিটিং ১৮ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখলে আপনি উষ্ণ থাকতে পারবেন এবং খরচও বাড়বে না। পাশাপাশি প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজন-বিশেষ করে যারা বয়স্ক বা অসুস্থ, তাদের খোঁজখবর রাখতে উৎসাহিত করা হয়েছে। ঘরের রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে কাউন্সিলের পক্ষ থেকে।
শীতের দিনে ঘরে কিছু মৌলিক জিনিসপত্র মজুত রাখলে সুবিধা হয়, যেমন সর্দি-কাশির ওষুধ, ছোটখাটো আঘাতের চিকিৎসার সরঞ্জাম এবং কিছু শুকনো খাবার। গ্যাস সেফ রেজিস্টার্ড ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে ঘরের যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া নিরাপদ। প্রতিদিন গরম খাবার ও পানীয় খেলে শরীর উষ্ণ থাকে, আর দিনে পাঁচ ভাগ ফল ও সবজি খাওয়া স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। হালকা ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন ঠিক রাখে এবং শরীর গরম রাখতে ভূমিকা রাখে - ঘরের ভেতরেই করা যায়। একাধিক পাতলা পোশাক স্তর করে পরলে উষ্ণতা বেশি ধরে রাখা যায়, আর বাইরে গেলে স্লিপ-প্রতিরোধী জুতা পরা নিরাপদ। হট ওয়াটার ট্যাঙ্কে ইনসুলেশন লাগানোতে খরচ কম হয় এবং সাশ্রয় বেশি, আর ট্যাঙ্কের তাপমাত্রা ৬০ ডিগ্ৰী সেলসিয়াসে রাখলে তা যথেষ্ট। রেডিয়েটরের পেছনে ফয়েল বা রিফ্লেক্টর ব্যবহার করলে তাপ ঘরে ফিরে আসে এবং ঘর দ্রুত গরম হয়। গাড়ির অ্যান্টিফ্রিজ, স্ক্রিন ওয়াশ, টায়ার-সব ঠিক আছে কিনা দেখে নেওয়াও প্রয়োজন।
শীতকালে নিজেদের পাশাপাশি যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন - তাদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের দায়িত্ব। তাই উষ্ণ থাকুন, নিরাপদ থাকুন এবং একে অপরের খোঁজখবর রাখুন।







