সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর গলাচিপায় গভীর নলকূপের অভাবে কয়েকটি পরিবারের লোকজন খালের পানিতে তৃষ্ণা নিবারণ করার খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার রতনদী তালতলী ইউনিয়নের উলানিয়া বাজারের দক্ষিন পাশে ১ নম্বর ওয়ার্ডে চৌদ্দকানী গ্রামে আমির হোসেন হাওলাদারের বাড়িতে ও আশেপাশে নেই গভীর নলকূপ। আমির হোসেন হাওলাদারের বাড়ি থেকে বেশ দূরে রয়েছে একটি গভীর নলকূপ। কিন্তু পথের দূরত্বের কারণে বিকল্প হিসেবে খালের পানি ফুটিয়েই তৃষ্ণা নিবারণ করতে হয় তাদের। এ এলাকায় সুপেয় পানির অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কয়েকটি পরিবার। আমির হোসেন জানান, বিগত কয়েক বছর যাবত আমরা পানির কষ্টে জীবন যাপন করছি, নির্বাচনে অনেক আশ্বাস দিলেও কেউ কথা রাখেনি, নিরুপায় হয়ে আছি। আমাদের ১ নম্বর ওয়ার্ডে অনেক দূরে একটি টিউবওয়েল রয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে পানি আনতে গেলে অনেক সময় লাগে। তাই আমরা খালের পানি সকল কাজে ব্যবহার করি। বিগত সরকারের আমলে একাধিকবার আবেদন করেও কোন সুরহা পাই নাই। বর্তমান সরকার সকল বৈষম্য দূর করতে বদ্ধ পরিকর। তাই আমরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আমাদের বাড়িতে একটি টিউবওয়েল স্থাপনের জোর দাবী জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমির হোসেনের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। বাসায় রান্না বান্না করি। আমাদের বাড়ি থেকে টিউবওয়েল অনেক দূরে হওয়ায় পানি আনতে যেতে পারি না। তাই খালের পানিই আমরা ব্যবহারকরি। এতে বিশুদ্ধ পানির অভাবে আমাদের বাড়িতে প্রায়ই ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয় অনেকে। ঐ গ্রামের সেকান্দার মোল্লা, ইদ্রিস, বেল্লাল, ইব্রাহিম, মাসুদ, রাসেল, ফাতেমা, রাহিমা এরা বলেন, এখানে আমরা কয়েকটি পরিবার বসবাস করছি। সকলেই বিশুদ্ধ পানির অভাবে কষ্টে আছে। একটি টিউবওয়েল পেলে আমরা এলাকাবাসী নিরাপদ পানি পান করতে পারতাম। এ বিষয়ে রতনদী তালতলী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আলমগীর মুন্সী ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রুমা বেগম বলেন, আসলেই পরিবারগুলো টিউবওয়েলের অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সরকারিভাবে একটি টিউবওয়েল পেলে তাদের এ কষ্ট দূর হবে। এ বিষয়ে সাজেদা বেগম উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে লিখিত আবেদন করবেন বলে জানান। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলালের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বরাদ্দ আসলে যাচাই বাছাই করে ঐ গ্রামে একটা গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করা হবে।
গলাচিপায় গণঅধিকার পরিষদের পানপট্টি ইউনিয়নের সভাপতিকে মারধর করছে উশৃঙ্খল সদস্যরা
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গ্রামর্দ্দন মৎসজীবীর গ্রাম সমিতির ঘরের আসবাবপত্র ও সমিতির সদস্যদেরকে লাঞ্চিত করেছে ওই সমিতির গুটি কয়েক উশৃঙ্খল সদস্যরা। ঘটনাটি ঘটেছে পানপট্টি এলাকার ৫নং ওয়ার্ডে বটতলা বাজারে বুধবার দুপুরে। এ ব্যাপারে ৮ জনের বিরুদ্ধে গলাচিপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সমিতির সদস্য ও গণঅধিকার পরিষদের পানপট্টি ইউনিয়নের সভাপতি দুধা মিয়া। জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি এলাকায় অর্থমন্ত্রনালয়ের অধীনে এসপিএমএফপি প্রজেক্টের সহযোগিতায় ১ শত ৩০ জন জেলে নিয়ে একটি সমিতি গঠন করেন। সেখানে একটি ৩ বছর মেয়াদী ঘরে সমিতির কার্যক্রম করার জন্য ডিড করা হয়। ডিডের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হয়ে যায়। এ প্রকল্পের গলাচিপা ক্লাস্টার অফিসার এমএ সায়েম সকল সদস্যকে বুধবার দুপুরে মিটিং আহবান করেন। উপস্থিত অধিকাংশ সদস্য এখানে ঘর রেখে সদস্যরা সভা করতে রাজি নয়। তারা অন্যত্র ঘরের ডিড করে সেখানে মিটিং করতে রাজি হয়। সমিতির নিয়ম অনুযায়ী ৬৫% অধিক লোক যেখানে মতামত দিবেন সেখানেই হবে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায় অফিসের বাহির থেকে আসা নাজমুল ও নিয়াজ সহ আরো কয়েক জন বহির্গত লোক পানপট্টি ইউনিয়নের গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও সমিতির সদস্য দুধা (৪৩), স্বপন, মজিবুরকে মারধরসহ অফিসের আসবাব পত্র ভেঙ্গে ফেলে এবং দুধার সাথে থাকা টাকা পয়সা নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে সমিতির সভাপতি মোবারক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মজিবর চৌকিদার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ প্রকল্পের গলাচিপা ক্লাস্টার অফিসার এমএ সায়েম বলেন, এটা মূলত সরকারী প্রকল্পের কাজ, ১৩০ জন সদস্যের মধ্যে ৮/১০ জন সদস্য ঝামেলা করে, সদস্যদের কে মারধর করছে আসবাবপত্র ভেঙ্গে সরকারি কাজে বাধে দিচ্ছে। সবই স্বার্থের জন্য করে ওরা। নাজমুল হাওলাদার বলেন, দুধা এ সমিতির সদস্য নয়। তবে দুধাই আমাকে প্রথমে ধাক্কা দিয়েছে। কোন ধরণের মারধর হয়নি। এ ব্যাপারে গলাচিপা অফিসার ইনচার্জ মো. ফেরদৌস আলম খান জানান, অভিযোগ পেয়েছি তবে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।