সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর গলাচিপায় স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহৃত স্কুল ছাত্রী না পেয়ে তার মা মালতী রানী বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে মোকাম পটুয়াখালী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের হরিদেবপুর টেকনিক্যাল সরকারি স্কুলের পূর্ব পাশে সরকারি রাস্তায়। অপহৃত স্কুল ছাত্রী অপু রানী (১৫) হচ্ছেন গোলখালী ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কেসব চন্দ্র দাস ও মালতী রানী দম্পতীর কন্যা। মামলা সূত্রে ও মামলার বাদী অপহৃত অপু রানীর মা মালতী রানী জানান, গত (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ১০টার সময় সরস্বতী পূজা উদযাপণ শেষে অপু রানী স্কুলের দিকে রওয়ানা হলে আসামী ১। দুলাল চন্দ্র দাস (৩২) পিতাঃ কানাই দাস, ২। লিপি রানী (৫৫) স্বামীঃ মৃত কানাই দাস, ৩। পলাশ চন্দ্র দাস (২৫) পিতাঃ মৃত কেশব চন্দ্র দাস, সর্ব সাং- ছোট বিঘাই, পটুয়াখালী, ৪। শান্তি রঞ্জন দাস (৩৬) পিতাঃ মুকিন্দ্র চন্দ্র দাস, সাং- বাংলাবাজার, ডাকুয়া, গলাচিপা সংঘবদ্ধ হয়ে জোরপূর্বক একটি সাদা প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা এলাকার খারাপ প্রকৃতির লোক। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। আমার মেয়ে অপু রানী হরিদেবপুর টেকনিক্যাল সরকারি স্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। ১নং আসামী দুলাল চন্দ্র দাস প্রায় সময়ই আমার মেয়ে স্কুল ও প্রাইভেটে যাওয়া আসার সময় ইভটিজিং করতো। সে মোবাইল ফোনে আমার মেয়েকে কুপ্রস্তাব দিত। আমার মেয়ে তার প্রস্তাবে রাজী না হয়ে বিষয়টি আমাদেরকে জানালে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মেয়েকে অপহরণ করার হুমকি দেয় এবং আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা মেয়েকে অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর না পেয়ে প্রশাসনের সহযোগীতা নিতে গলাচিপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে থানা পুলিশ আমার অভিযোগ গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। ঘটনার ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও এই পর্যন্ত আমার মেয়ের কোন সন্ধান পাইনি। তাই আমি বাদী হয়ে আদালতে মামল করি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে গলাচিপা থানাকে এজাহার নেওয়ার নির্দেশ দেন। আমার মেয়েকে ফিরে পেতে আমি থানা পুলিশ সহ প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।
গলাচিপায় এরশাদ হোসেন বাদলের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
পটুয়াখালীর গলাচিপায় এরশাদ হোসেন বাদলের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এরশাদ হোসেন বাদল হচ্ছেন গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম আবদুল বারেক মিয়ার পুত্র চিকনিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদের বড় ভাই, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মরহুম এরশাদ হোসেন বাদল। মরহুম এরশাদ হোসেন বাদলের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১ মার্চ) বিকাল ৩টায় চিকনিকান্দি আহসাবিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে এক দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী মজিবর রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহিন সাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সরদার মু. শাহ আলম, জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মাইনুল ইসলাম রনো, কাওসার আহম্মেদ তালুকদার, মো. আলমগীর হোসাইন, মোফাজ্জেল হোসেন মাসুদ, ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ^জিৎ রায়, গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার, গলাচিপা প্রেস ক্লাব সভাপতি সমিত কুমার দত্ত মলয়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবনী রায় সহ উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মরহুম এরশাদ হোসেন বাদলের ছোট ভাই চিকনিকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ। পরে আলোচনা শেষে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
গলাচিপায় জাতীয় বীমা দিবস ও ৭ই মার্চের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
পটুয়াখালীর গলাচিপায় সারা দেশের ন্যায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্থানীয় সকল ইনস্যুরেন্স কোম্পানী বীমা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে উপজেলা পরিষদের সম্মুখে ও মিলনায়তন কক্ষে শুক্রবার সকাল ১০ টায় এক র্যালী, আলোচনা সভা ও তিনজন গ্রাহকদের মাঝে বোনাস চেক হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের সুযোগ্য চেয়ারম্যান মু. শাহিন শাহ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাছিম রেজা, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সরদার মু. শাহ আলম, গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার (কনসালটেন্ট) ডাঃ মোঃ আল আমিন, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস সালমা ওয়াহিদ, গলাচিপা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন টুটু, পানপট্টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মাসুদুর রহমান, গলাচিপা প্রেসক্লাব সভাপতি সমিত কুমার দত্ত মলয়, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট মু. খালিদ হোসেন মিলটন, গলাচিপা থানা পুলিশ কর্মকর্তা এসআই উজ্জল চক্রবর্তী, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহবুব হাসান শিবলী, উপজেলা সমাজসেবা শিশু সুরক্ষা কর্মী পঙ্কজ গাঙ্গুলী, বীমা প্রতিনিধি তপন কুমার রায় ও মন্টু লাল কর্মকার প্রমুখ। পরে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবসটি পালন উপলক্ষে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, জন প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেয়। প্রশাসনিকভাবে আগামী ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু ও জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন সহ আলোচনা সভার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
গলাচিপায় সন্ত্রাসী সুমন রাজার অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকাবাসী
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের চিকনিকান্দী বাজার এলাকায় মাদক, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সুমন রাজা ও তার বাহিনী। সুমন রাজা ও তার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকাবাসী। সুমন রাজা ও তার বাহিনীর নামে গলাচিপা থানা ও আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। আর তাদের অত্যাচারের স্বীকার অত্র এলাকার ফাতেমা সিদ্দিক (বাবলিন), আ. কাইয়ুম, জাকির প্যাদা সহ আরো অনেকে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত অনুমান ৯ টার দিকে ফাতেমা সিদ্দিক (বাললিন) এর দোকানে ঢুকে লোহার রড ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে সুমন রাজা ও তার বাহিনী। এ বিষয়ে ফাতেমা সিদ্দিক (বাবলিন) বলেন, সুমন রাজা আগে থেকেই আমার কাছে চাঁদা দাবী করে আসছিল। আমি চাঁদা না দিলে আমাকে ও আমার ভাইকে দোকান করতে দিবে না। আমরা চাঁদা না দিলে ২২ ফেব্রুয়ারি রাত অনুমান ৪টার দিকে সুমন তার দলবল নিয়ে আমার দোকানের তালা ভেংগে আমার দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আমি বিকালে গলাচিপা থানায় এসে অভিযোগ করি। এতে সুমন রাজা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ও আমার ভাইকে দোকানে পেয়ে মারধর করে। আমাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী গলাচিপা থানা পুলিশে খবর দিলে সুমন ও তার বাহিনীর পালিয়ে যায়। পরে গলাচিপা থানা পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ বিষয়ে আহত কাইয়ুম জানান, সুমন রাজা ও তার বাহিনীর সদস্যরা কোন কিছুই তোয়াক্কা করছে না। চিকনিকান্দী গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. সুমন রাজা (৩০), মো. জাফর হাওলাদারের ছেলে মো. অলি (৩২), হারুন মোল্লার ছেলে মো. রবিউল মোল্লা, মো. ইউসুফ মোল্লার ছেলে মো. নিজাম মোল্লা আরো ৮/১০ জন লোক দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম সহ চিকনিকান্দী বাজার ও গ্রামে প্রতিবেশী এবং এলাকার নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার করে চাঁদাবাজী, দোকান লুটপাট, মাদক ব্যবসা ও জমি দখল করে আসছে। তারা আমাকে ও আমার বড় বোনকে এলোপাথারীভাবে পিটিয়ে আহত করে। এ বিষয়ে মিজানুর রহমান শাকিল জানান, সুমন এলাকায় গত ১০ বছর ধরে অসামাজিক অপকর্মসহ ইয়াবা ব্যবসা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এ বিষয়ে সুমন রাজার মুঠোফোনে জানতে কল করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে চিকনিকান্দী গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিবেক দেবনাথ বলেন, দু’পক্ষকে একাধিকবার ডাকা হলেও সুমন রাজা ইউনিয়ন পরিষদে আসে না। চিকনিকান্দী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ বলেন, যদিও বিষয়টি আমি আপনাদের মাধ্যমে শুনেছি, দু’পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে মীমাংসার ব্যবস্থা করব। তবে যদি কোন মামলা হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি আইন দেখবে। এ বিষয়ে গলাচিপা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফেরদাউস আলম খান জানান, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, এ উপজেলায় মাদকের কোন ঠাই নাই। সে যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। উল্লেখ্য সুমন রাজা ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে মো. কাইয়ুম বাদী হয়ে মঙ্গলবার গলাচিপা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার সি,আর মামলা নং- ১৬৫/২৪। আদালত গলাচিপা থানার ওসিকে এজাহার নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।