নিউজ ডেস্ক,টিভি নাইনটিন অনলাইন
ঢাকাঃ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি কোটাবিরোধীদের বিক্ষোভ দমনে কী কী ঘটেছে তা জানতে চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফলকার টুর্ক বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান।তিনি বলেন, সরকারি নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থী ও তরুণরা। এ আন্দোলনে ১৭০ জনের বেশি নিহত এবং ১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এ বিক্ষোভ দমনে কী করা হয়েছে তা যেন সরকার দ্রুত বিস্তারিত প্রকাশ করে।তিনি দাবি করেন, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকে এখনো নিখোঁজ। বহু গ্রেপ্তার হয়েছেন। এমনকি আহত ব্যক্তিদের কাউকে কাউকে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া হামলার শিকার হওয়া সাধারণ মানুষদের রক্ষায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও জানতে চান তিনি।তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ অন্যান্য মানবাধিকার রক্ষায় এ ধরনের পদক্ষেপ বিষয়ে সরকারকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক রীতিনীতি ও মানদণ্ড মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।হাইকমিশনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ যেন মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও মানদণ্ড মেনে পরিচালিত হয়। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং এই সহিংসতার পেছনের কারণ নিয়ে সংলাপের পরিবেশ তৈরি করার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ উঠেছে তার সবগুলোর নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত আশা করি। প্রয়োজনে এই প্রক্রিয়ায় আমার দপ্তরের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।এদিকে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত বিক্ষোভ দমনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ অস্ত্রের ব্যবহার করেছে। এমন অভিযোগ করেছে লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ অভিযোগ করেছে সংস্থাটি।বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি জানায়, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে কারফিউ জারি এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় সেখানে মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এর মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যেসব ভিডিও এবং আলোকচিত্র পেয়েছে সেগুলো যাচাইবাছাই ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে। এ ক্ষেত্রে বিক্ষোভ দমনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রাণঘাতী ও কম প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের ৩টি ঘটনার ভিডিও যাচাই করেছে অ্যামনেস্টি ও এর ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাব।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সেই সঙ্গে সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে পুনর্বাসন করার দাবি জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থাটি।