নিউজ ডেস্ক,টিভি নাইনটিন অনলাইন
ঢাকাঃ বান্দরবানের সুয়ালক মৌজা এবং লামার ডলুছড়ি মৌজায় বেনজির আহমেদ, তার স্ত্রী ও মেয়ের নামে রয়েছে অন্তত ৮০ একর জমি। আর এ জায়গায় রয়েছে মাছের প্রজেক্ট, গরুর খামার, বিভিন্ন ফলের বাগান ও রেস্টরুম। যা স্থানীয়দের কাছে এসপির জায়গা হিসেবে পরিচিত। জানা যায়, ক্ষমতার জোরে নামমাত্র মূল্যে এসব জমি অসহায় পরিবারকে বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। আর এসব জমি ক্রয় করতে সহযোগিতা করেছে স্থানীয় জেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি মং ওয়াইচিং মারমা। সম্প্রতি দখলকৃত জায়গাগুলো ফিরে পেতে সরকারের কাছে দাবি তুলেছেন অসহায় পরিবারগুলো। ২০১৬ সালে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মির্জা ও মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে সুয়ালক মৌজায় ৬১৪নং দাগে ও ৩নং সিটে ২৫ একর জমি লিজ নেন বান্দরবান পৌর এলাকার মধ্যমপাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে শাহজাহানের কাছ থেকে। নেয়ার পর সেখানে তিনি মাছের প্রজেক্ট ও গরুর খামার করেন। সরকারিভাবে করা হয় রাস্তা এবং পেয়েছেন বিদ্যুৎ সংযোগও। অবকাশ যাপনের জন্য করা হয়েছে একটি দোতলা রেস্ট রুম। যাতে রয়েছে এসি। এছাড়া লামার ডলুছড়ি মৌজার টংগ ঝিরিতে রয়েছে আরও ৫৫ একর জমি। একসময় এখানে অসহায় ও গরীব পরিবারের বসবাস ছিল সেখানে। চাষাবাদের মাধ্যমে আয়ের একমাত্র উৎস্য ছিল এ জমিগুলোই। অথচ এসব অসহায় ও গরীব পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করে জোরপূর্বক অল্প পরিমাণে অর্থ ধরিয়ে দিয়ে সরে যেতে বাধ্য করা হয়।বান্দরবান মাঝের পাড়ার চা অফিস থেকে ১ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ২৫ একরের আরেকটি জমি। জমিটি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও মেয়ের নামে লীজ নেয়া। এখানে রয়েছে একটি গরুর খামার, কয়েকটি মাছের প্রজেক্ট, একটি এসি সম্বলিত রেস্ট রুম, বিভিন্ন ফলজ ও সেগুন বাগান। ভেতরে যেন কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কাঁটাতারের বেড়ার পাশাপাশি রয়েছে তালা লাগানো একটি গেট। আশপাশে কোন বসতি না থাকার পরও সেখানে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। হয়েছে ইটের রাস্তা। যা বাগানে গিয়েই শেষ হয়েছে।এছাড়া লামার ডলুছড়ি মৌজার টংগঝিরিতে রয়েছে ৫৫ একর জমি। যাতে রয়েছে বিভিন্ন ফলের বাগান, একটি বসত ঘর। বিস্তীর্ণ এ জায়গাটি পুরো ঘুরে বেড়াতে সময় লাগবে প্রায় অর্ধ প্রহর। গরুর খামারের দায়িত্বে থাকা লেদু মিয়া জানান, বেনজির আহমেদের গরুর খামারে তিনি ১ মাস ধরে আছেন।লামার ডলুছড়ি মৌজার টংগঝিরির বাগানের কেয়ারটেকার জানালেন, বান্দরবান স্বেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি মং তার বেতন দেয়। তবে এটি পুলিশ কর্মকর্তার জায়গা বলে জানালেন তিনি।এদিকে কমদামে জোর করে দখলে নেয়া জমিগুলো ফেরত চান ভুক্তভোগিরা।বান্দরবান সুয়ালক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উ ক্য নু মারমা জানান, বেনজীর আহমেদের সুয়ালক মৌজার মাঝের পাড়ায় জায়গা আছে তা আমি জানি। জায়গাটি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মং ওয়াই চিং দেখাশুনা করে। মাঝে মাঝে একজন এসপিও এখানে আসেন। তবে তার নাম জানিনা। তবে বিষয়গুলো অস্বীকার করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মং ওয়াই চিং জানান, সুয়ালকের মাঝের পাড়ায় বেনজীর আহমেদের জায়গার পাশে আমার কিছু জায়গা আছে। সে সুবাদে একদিন এক পুলিশ কর্মকর্তা এসে আমাকে বেনজীর আহমেদের জায়গাগুলো দেখাশুনা করতে বলেন। এদিকে লামার ডলুছড়ির টংগ ঝিরির জায়গা জখলের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ডলুছড়ি মৌজার জায়গার ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। প্রশাসনের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।এদিকে এসব জমি উদ্ধার করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ফিরিয়ে দেয়ার দাবি স্থানীয়দের।