গ্রাম বাংলা ২৯ এপ্রিল ২০২৪

গলাচিপায় তীব্র তাপদাহে মারা যাচ্ছে মাছ, বিপাকে চাষীরা

পটুয়াখালী গলাচিপার আরো খবর

post

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : দক্ষিনাঞ্চলের জেলা পটুয়াখালীর গলাচিপায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপদাহ চলছে। এই তাপপ্রবাহের ফলে জন জীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। উপজেলায় বিগত দিনে তাপদাহের জন্য পুকুরে মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এতে চরম ক্ষতির মুখে রয়েছে শত শত চাষীরা। খাল নদী থেকে পুকুরে পানি দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের সুহুরী ১ম খন্ড এলাকার সুফিয়ান মৃধার ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০) জানান, ৬০ শতাংশ জমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ করেছি। পুকুরে রুই, কাতলা, সিলভার কার্প, বড় চিংড়ি মাছ চাষ করে আসছি। কয়েক সপ্তাহে তীব্র তাপদাহে ও বৃষ্টির না হওয়ায় পুকুরের পানি কমে যাওয়ার গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মাছগুলোর গায়ে পচন দেখা দিয়েছে। এতে মাছ মরে ভেসে উঠছে। আমার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। একই রকমের ঘটনা ঘটেছে চর সুহুরীর তালেব প্যাদার সমিতি করা ৪টি পুকুরের মাছ। শনিবার সকাল থেকে মাছগুলো মরে ভেসে উঠা শুরু হয়েছে। গলাচিপা সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের খবির মৃধা ও জাফর মৃধা জানান, গরমে পুকুরে মাছ চাষে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পুকুরের পানি কমে যাওয়ায় দূর থেকে মেশিনের সাহায্যে পানি আনা হয়েছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় গোলখালী ইউনিয়নের সুহুরী ১ম খন্ড এলাকার মোঃ ছুরাত আলীর ছেলে জেলে জাকির হোসেন সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি মানুষের কাছ থেকে ৪ শতাংশ জমির একটি পুকুর লিজ নেই। পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতীর প্রায় ২ লক্ষ টাকার মাছ চাষ করেছি। এর পিছনে খাবার দিতে আরো ৫০ হাজার খরচ হয়েছে। কিন্তু প্রচন্ড গরমের কারণে পানি গরম হয়ে উঠেছে। আজ সকাল থেকেই মাছগুলো মরে ভেসে উঠেছে। এ বিষয়ে গলাচিপা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দাস বাড়িতে কালিপদ দাসের ছেলে পরেশ দাস গং এর ৬ শতাংশের একটি পুকুর ও ১২ শতাংশ দৈর্ঘ্য একটি মাছের ঘের আছে। পরেশ দাস জানান, আমি এ বছর ৫ লাখ টাকার মাছ ছেড়েছি। কিন্তু ৫ শত টাকার মাছও পানিতে এখন নাই। সব মরে ভেসে উঠেছে। প্রতি বছর মাছ বিক্রি করে আমাদের ৫ ভাইয়ের যৌথ পরিবারের সংসার চলে। এখন আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি। সাহা বাড়ির নির্জন সাহা বলেন, ২টি পুকুরে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মাছ ছেড়েছি। আজ দুপুর থেকে মাছ মরার হিরিক শুরু হয়েছে। কী যে করব ভেবেই পাচ্ছি না। পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাজি বাড়ির মৃত. মো. আলাউদ্দিনের ছেলে মো. আফজাল হোসাইন বলেন, আমার মামার ছোট একটা পুকুর আছে। শখের বসে সেখানে ৫০ হাজার টাকার মাছ ছেড়েছি। গরমে পুকুরের পানি কমে গিয়ে মাছগুলো মরে যায়। ডাকুয়া ইউনিয়নের দিলীপ রঞ্জন গাঙ্গুলীর ছেলে পঙ্কজ গাঙ্গুলী জানান, তার পুকুরে প্রায় ৭০ হাজার টাকার মাছ ছিল। কিন্তু মাছগুলো হঠাৎ মরে ভেসে ওঠে। রতনদী তালতলী ইউনিয়নের উলানিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে আমির হোসেনের পুকুরের প্রায় ৯০ হাজার টাকার মাছ মরে যায়। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে উপজেলার শত শত মাছচাষীরা উৎকন্ঠে রয়েছে বলে জানা গেছে। গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী বলেন, প্রচন্ড গরমে হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে। এতে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। মাছ মারা যাবার খবর কোনো কৃষক জানায়নি। তবে তীব্র তাপদাহে মাছ চাষীরা বিপাকে রয়েছে। দিনের বেলায় পুকুরে জাল টেনে তলদেশ থেকে গ্যাস বের করা, চুন লবন প্রয়োগ করা, পানি সেচের ব্যবস্থা করা সহ নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। 

গলাচিপায় সংবাদ সম্মেলন

পটুয়াখালীর গলাচিপায় ঝিলিক সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মো. শাহীন কাজী এই মর্মে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রবিবার (২৮ এপ্রিল) উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় সন্ধ্যা ৭টায় তিনি এ সম্মেলন করেন। সম্মেলনে তিনি বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ সুনামের সাথে কাজ করে আসছি। করোনাকালীন সময় নিজের জীবন বাজি রেখে সদস্য এবং গ্রাহকদের বাড়িতে বাড়িতে খবর নিয়েছি। অনেকের বাড়িতে খাবার পৌছে দিয়েছি। অনেক সদস্যের বাড়িতে ঔষধ পৌছে দিয়েছি। আমার প্রতিষ্ঠানে বেকার যুবক যুবতীসহ প্রায় ৭০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী সুনামের সহিত কাজ করে আসছেন। এই উপজেলায় ৪টি শাখায় সর্বমোট ৮ শত সদস্য রয়েছে। তাদের ভিতর আমি অধিক সংখ্যক সদস্যকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করেছি। সদস্যগণ আমার প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা সঞ্চয় রেখেছে। কতিপয় স্বার্থন্বেসী মহল আমার প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে সদস্যদেরকে ভুল বুঝিয়ে ঋণের কিস্তির টাকা বন্ধ করে দিয়ে ঝামেলা করে। যার কারণে দীর্ঘ ৭ মাস প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রাখা হয়। এমতাবস্থায় সকল সদস্যগণের স্বর্থে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে পারি তার জন্য সম্মানিত সকল সদস্যগণের সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করছি। বিনীত নিবেদক, নির্বাহী পরিচালক, ঝিলিক সমাজ উন্নয়ন সংস্থা মো. শাহীন কাজী।

রাঙ্গাবালীতে ভয়ংকর ‘টর্পেডো’ খালে ভেসে আসায় জনমনে আতঙ্ক 

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে ভয়ংকর ‘টর্পেডো’ খালে ভেসে আসায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে ‘টর্পেডো’-সদৃশ একটি বস্তু ভেসে এসেছে রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের মীরকান্দা গ্রামসংলগ্ন ভাঙা খালে বস্তুটিকে দেখতে পায় গ্রামবাসী। ভাসমান ওই বস্তুটি দেখতে ভিড় করে স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাছ থেকে বস্তুটি দেখে ভারী কোনো অস্ত্র ভেবে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশ খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তুটির কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় লোকজনদের। অন্যত্র যাতে ভেসে না যায়, এ জন্য রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় বস্তুটিকে। মৌডুবি ইউনিয়নের মীরকান্দা গ্রামের আরাফাত হোসেন বলেন, ‘বস্তুটি দেখতে ভারী কোনো অস্ত্রের মতো। তাই এটিকে প্রশাসন উদ্ধার করে সরিয়ে নেওয়ার দাবি করছি।’ গ্রামবাসীর ধারণা, পার্শ্ববর্তী রামনাবাদ চ্যানেল হয়ে হয়তো এটি ভাসতে ভাসতে এই খালে এসেছে। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট। রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, কোস্ট গার্ডকে বিষয়টি অবহিত করা হলে ছবি দেখে তারা প্রাথমিকভাবে জানায় এটি টর্পেডো হতে পারে। টর্পেডো ডুবন্ত থাকে, যেহেতু এটি ভেসে এসেছে- তাহলে সম্ভবত ব্যবহৃত। তবুও ঘটনাস্থলে গিয়ে কোস্ট গার্ড বিষয়টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। কোস্ট গার্ড রাঙ্গাবালী আউটপোস্টের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের আন্ধারমানিক নদীতে যে টিমটি আছে সেটি ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। যতটুকু আমি দেখলাম ওটা টর্পেডো হতে পারে, মিসাইল না। টর্পেডোর মাঝখানে যেভাবে জোড়া থাকে, ওটারও আছে। যেকোনো বড় জাহাজ ধ্বংস করে দেওয়ার কাজে টর্পেডো ব্যবহার হয়। এটা নৌবাহিনীর কাছে আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘টর্পেডো অনেক ভারী থাকে। সাধারণত এটা পানির নিচে থাকে। যেহেতু এটি ভেসে আসছে, সুতরাং ব্যবহার হয়েছে কিংবা ড্যামেজ হয়েছে বলে ধারণা করছি। তাই পানিতে ভেসে ভেসে আসছে। তবে যদি ভেতরে কোনো বাতাস থাকে তাহলে বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য বোম ডিসপোজাল ইউনিট গিয়ে ওটা পরীক্ষা করে দেখতে পারে। আমাদের যে টিম ঘটনাস্থলে গেছে তার রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ উল্লেখ্য, টর্পেডো হচ্ছে এক ধরনের স্বচালিত অস্ত্র, যা পানির নিচে বিস্ফোরক ওয়ারহেড বহন করে এবং লক্ষবস্তুর সংষ্পর্শে বা কাছাকাছি আসার পর বিস্ফোরিত হতে পারে। এটি পানির নিচে চালিত হয় এবং পানির নিচে বা ওপরে উভয় স্থান হতে নিক্ষেপ করা যায়। এগুলোকে বিভিন্ন প্রকারের উৎক্ষেপকের দ্বারা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব।




আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner