গ্রাম বাংলা ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

পটুয়াখালীতে দিনে-দুপুরে মোটর সাইকেল চুরির হিড়িক, অতিষ্ট মোটর সাইকেল মালিকরা

পটুয়াখালী গলাচিপার আরো খবর

post

গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীতে দিনে-দুপুরে একের পর এক বেড়েই চলেছে চুরির ঘটনা। চোর আতঙ্কে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। বিশেষ করে শহরের হাসপাতালগুলো ও নিরিবিলি এলাকায় বসবাসকারী লোকজন ও দূর দুরান্ত থেকে জেলা শহরে আসা মানুষের ঘুম হারাম করে দিয়েছে সংঘবদ্ধ চোরচক্র। প্রতি নিয়ত প্রশাসনের নাকের ডগা থেকে চুরি করে মোটর সাইকেল চুরি সহ, হাইজ্যাক, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় হচ্ছে। পুলিশ বিভিন্ন সময় অভিযান চালালেও এর কোন সুরহা হচ্ছে না। এতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোর চক্রের সদস্যরা। সাধারণ মানুষ সহ সরকারী কর্মকর্তাদের গাড়িগুলো চুরি হচ্ছে অহরহ। তাদের অভিযোগ প্রশাসনের তৎপরতা কম থাকায় মোটরসাইকেল চুরি যেন চোরচক্রের হাতের মোয়া হয়ে দাড়িয়েছে। এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা থেকে পটুয়াখালী জেলা শহরে আসা পঙ্কজ গাঙ্গুলী (উপজেলা সমাজসেবা কর্মী) বলেন, শনিবার বেলা অনুমান (৯ ডিসেম্বর) ১টা ৩০মিনিটের সময় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরাতন ভবনের গেটে আমার মটর সাইকেলটি রেখে আমার অসুস্থ মাকে দেখতে হাসপাতালের ভিতরে যাই। মায়ের খোজ খবর নিয়ে ঔষধ কেনার জন্য ৩০ মিনিট পরে বাহিরে এসে দেখি গেটে আমার মটর সাইকেলটি নাই। আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আমি পটুয়াখালী সাধারণ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি। যার ডায়েরী নং- ৪৪৭৪/২৩, তারিখ- ০৯/১২/২০২৩। আমার নিজ ব্যবহৃত হিরো স্পীলীন্ডার মটর সাইকেল এর ইঞ্জিন নং- ঐঅ১০অঐগ৯ঋ০০৮১৭, চেসিস নং- চঝ১ঐঅড০৮৪গঔখ০১৪৯৭, গাড়ীর নম্বর পটুয়াখালী-হ-১২-৮৫১২, গাড়ির রং- কালো। এভাবে যদি মানুষের জান মালের নিরপত্তা না থাকে তাহলে আমরা কোথায় যাব। প্রশাসনের কাছে আমি আমার গাড়ি ফেরত পাওয়ার জোর আবেদন করছি। এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন ব্যানার্জী বলেন, দিনে দুপুরে গাড়ি চুরি হওয়া বিষয়টি আসলেই দুঃখ জনক। আমি প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, দিনে দুপুরে গাড়ি চুরি হওয়া তাও আবার হাসপাতালের ভিতর থেকে বিষয়টি ভাবনার বিষয়। চোর চক্রকে ধরার জন্য আমরা প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার আহবান জানাই। সকলে সতর্ক থাকলে চুরি কমে যাবে। পটুয়াখালী জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মশিউর রহমান বলেন, জেলার প্রশাসন মহলের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। এর আগেও একজন ডিবি পুলিশ কর্মকর্তার মটর সাইকেল চুরি হয়েছে। সেটার আজও কোন খবর পাওয়া যায় নি। এভাবে চলতে থাকলে প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে। এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন জানান, পঙ্কজ দেবনাথ গতকাল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। পটুয়াখালীতে চোরচক্রটি সংঘবদ্ধ। তবে অপরাধী চক্র যত বড়ই হোক না কেন তাদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। আমাদের টহল টিমও জোরদার করা হয়েছে।

গলাচিপায় গাছ কাটায় বাঁধা দেওয়ায় গাছের মালিককে মারধর, হাসপাতালে ভর্তি 

পটুয়াখালীর গলাচিপায় গাছ কাটায় বাঁধা দেওয়ায় গাছের মালিককে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোলখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে পাকা রাস্তার দক্ষিন পাশে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী গাছ মালিক হচ্ছেন খলিলুর রহমান তালুকদার (৬৮)। এ বিষয়ে গুরুতর আহত খলিলুর রহমান তালুকদার জানান, গত বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টার দিকে আমার রেকর্ডীয় জমির সম্পত্তির গাছ আমাদের এলাকার প্রভাবশালী শাহনেওয়াজ তালুকদার তার দলের ১২/১৩ জন লোক একত্রিত হয়ে আমার লাগানো চাম্বুল গাছ, রেইন্ট্রি গাছ, মেহগনি গাছ জোর পূর্বক গায়ের জোরে কেটে গাড়িতে তোলার সময় আমি জানতে পেরে বাঁধা দিলে তারা আমাকে এলোপাথারীভাবে কিল, ঘুষি, লাথি মারে এবং বাংলা দা এর অপর পিঠ দিয়ে পিটিয়ে আমাকে পেটাতে থাকে। দায়ের একটি কোপ আমার গালে লাগে। আমি ডাক চিৎকার দিলে এলাকাবাসী এসে পড়লে মারধরকারীরা দুটি গাছ নিয়ে তড়িঘড়ি করে চলে যায়। বাকি গাছ তারা ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসী সময়মত না আসলে তারা আমাকে হত্যা করে আমার গাছগুলো নিয়ে যেত। পরে এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ বিষয়ে আহত খলিলুর রহমান তালুকদারের ছোট মেয়ে উম্মে নুহা আম্মারা (৩২) জানান, আমার বাবাকে শাহনেওয়াজ তালুকদার সহ ১২/১৩ জন লোক একত্রিত হয়ে খুনের উদ্দেশ্যে মারধর করেছিল। এলাকাবাসী না পড়লে আমার বাবাকে বাঁচানো যেত না। আমি এর সঠিক বিচার চাই। একই এলাকার আইয়ুব আলী, আফছের আলী প্যাদা, জাহাঙ্গীর প্যাদা, শাকিল প্যাদা এরা জানান, খলিলের ডাক চাৎকার শুনে আমরা বাসা থেকে বেরিয়ে ঘটনাস্থলে আসায় মারধরকারীরা আমাদের দেখে পালিয়ে যায়। পরে আমরা খলিল তালুকদারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। এ বিষয়ে শাহনেওয়াজ তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মাকেও ও আমাকে প্রতিপক্ষরা মারধর করেছে। ওখানে আমাদেরও জায়গা আছে। এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মো. মেজবাহউদ্দিন বলেন, খলিলুর রহমান তালুকদার আমাদের চিকিৎসাধীনে হাসপাতালের ২য় তলায় ৭ নম্বর বেডে ভর্তি আছে। তার মুখমন্ডলে একটি আঘাতের (কাটা) চিহ্ন রয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো কালো দাগ রয়েছে এবং মাথায় চোট লেগেছে। তার অবস্থার অবনতি হলে আমরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এ বিষয়ে খলিলুর রহমান তালুকদারের মেয়ে উম্মে নুহা আম্মারা বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামী করে গলাচিপা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ১৪, তারিখ- ০৮/১২/২০২৩। এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শোনিত কুমার গায়েণ বলেন, গলাচিপা থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। আসামীরা রবিবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় গলাচিপা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত বাবুল মাতব্বর নামে এক আসামীকে জেলা হাজতে প্রেরণ করেন।


আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner