কমিউনিটি ১৭ নভেম্বর ২০২৩

বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ব্রিটিশ—বাংলাদেশী হুজহু’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানের ১৪তম আসর

post

 ব্রিটেনের বাংলাদেশী কমিউনিটির সাফল্যগাঁথা ও অগ্রযাত্রার চিত্র ব্রিটিশ—বাংলাদেশীদের হুজহু প্রকাশনায় ফুটে উঠে। দীর্ঘ চৌদ্দ বছর ধরে এই প্রকাশনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশী কমিউনিটির সাথে ব্রিটেনের মূলধারায় সেতুবন্ধন তৈরী করতে এবং পেয়েছে সফলতাও। এই প্রকাশনা তরুণ প্রজন্মদের মাঝে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা সঞ্চার করবে।১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার লন্ডনের অভিজাত ভেন্যু মেরিডিয়ান গ্র্যান্ড হলে ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশী হুজহু’র প্রকাশনা ও এওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের ১৪তম আসরের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন লর্ড সোন ভ্যালী।নিজ নিজ পেশায় অসাধারণ সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে এগিয়ে চলছেন, এমন আটজন ব্রিটিশ—বাংলাদেশিকে এওয়ার্ড দিয়ে সম্মানিত করেছে ব্রিটিশ বাংলাদেশী হুজহু। বাংলা মিরর গ্রুপের এই প্রকাশনায় এবার সংযুক্ত হয়েছে ২৭৩ জন ব্রিটিশ—বাংলাদেশীর সাফল্যগাঁথার কথা। এবারের প্রকাশনায় সংযুক্ত হয়েছে নতুন নতুন প্রতিভার অবদানের কথা। নতুনত্ব সমৃদ্ধ করেছে এ প্রকাশনাকে। ব্রিটিশ—বাংলাদেশী তৃতীয় প্রজন্মকে যুক্ত করে হুজহু কলেবরে বৃদ্ধি পেয়েছে, আঙ্গিকেও শোভিত হয়েছে নতুনদের অবদানে।  এবারের এওয়ার্ডপ্রাপ্তরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, হুজহু’র এওয়ার্ডপ্রাপ্তি সত্যিই সম্মানের ও গর্বের। এটি আমাদের কাজের স্বীকৃতি। যাত্রালগ্ন থেকে ব্রিটিশ—বাংলাদেশী হুজহু কমিউনিটির গুণিজনদের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা লিপিবদ্ধ করে তাদের স্মরণীয় করে রাখছে — যা আগামী প্রজন্ম আমাদের সম্পর্কে জানতে পারবে। ব্রিটিশ—বাংলাদেশী হুজহু এর প্রধান সম্পাদক আব্দুল করিম গণি বলেন, ব্রিটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রবীণ ও নবীনরা ব্রিটিশ কমিউনিটিতে অনন্য ভূমিকা রেখে আসছে। আমাদের এই প্রকাশনা থেকে সহজেই কমিউনিটির অবদানের বিষয়টি জানতে পারে সবাই। মেরিডিয়ান গ্র্যান্ড ও ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউডের সহযোগিতায় আয়োজিত এবারের আসরের সঞ্চালনা করেন জনপ্রিয় উপস্থাপিকা নাদিয়া আলি ও ব্যারিস্টার আনোয়ার মিয়া। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকাশনার নির্বাহী সম্পাদক সোহানা আহমেদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ মূলধারা ও কমিউনিটির বিভিন্ন স্তরের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ। এবারের এওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেনঃ চ্যারিটি ওয়ার্কে বিশেষ অবদান রাখায়— সেন্টার ফর রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্যা প্যারালাইজড (সিআরপি) এর প্রতিষ্ঠাতা ভ্যালেরি এ্যন টেইলর ওবিই, রাজনীতিতে — ব্রিটিশ হাউজ অব কমন্স এর সদস্য আপসানা বেগম এমপি ও স্কটিশ পার্লামেন্ট মেম্বার ফয়সল হোসেন চৌধুরী এমবিই, ক্যাটারিং ও প্রপার্টি সেক্টরে বিশিষ্ট ব্যবসায়ি তোফাজ্জল মিয়া, একাউন্টেন্সিতে একাউন্টেন্ট তপন সাহা এফএআইএ, এফসিসিএ, ক্রীড়া সেক্টরে বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিসিএসএ — ইউকে) এর ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম, আইন ও প্রপার্টি ব্যবসায় — এ্যাকোর্ড লিগ্যাল গ্রুপের সিইও ইমন আহমেদ, এবং মিডিয়া সেক্টরে টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের কমিউনিকেশন অফিসার, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাংবাদিক মাহবুব রহমান।জমকালো এই আয়োজনে অতিথি হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার মোহাম্মদ হযরত আলী খান, কার্ডিফ সিটির লর্ড মেয়র বাবলিন মল্লিক, কনজারভেটিভ পার্টির লন্ডন সিটির মেয়র প্রার্থী সোজান হল, লন্ডন বরা অব ক্যামডেনের মেয়র নাজমা রহমান, রেডব্রিজ বারা কাউন্সিলের মেয়র জ্যোৎস্না ইসলাম, চ্যানেল এস এর চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি, চ্যানেল এস’র প্রতিষ্ঠাতা মাহি ফেরদৌস জলিল ও ব্যারিস্টার আনিস রহমান ওবিই।

অনুষ্ঠানে আপসানা বেগম এমপি—এর হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন চ্যানেল এস’র চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি ও হুজহু’র প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল করিম গণি, তফজ্জুল মিয়ার হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন লর্ড সোন ভ্যালী ও ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউড’র প্রধান ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমান, সাংবাদিক মাহবুব রহমানের হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন চ্যানেল এস’র প্রতিষ্ঠাতা মাহি ফেরদৌস জলিল ও ইউরোশিয়া ফুড সার্ভিসের ফাউন্ডার আবু লেইছ, ফয়সল  হোসেন চৌধুরী এমবিই—এমএসপি’র পক্ষে এওয়ার্ড গ্রহণ করেন ফজলুর রহমান আকিক এবং এওয়ার্ড তুলে দেন কার্ডিফ সিটির লর্ড মেয়র বাবলিন মল্লিক, ভ্যালারী আন ট্রেইলর ওবিই এর হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন ক্যামডেনের মেয়র নাজমা রহমান ও মেরিডিয়ান গ্র্যান্ড’র ডিরেক্টর নিকিতা মুলচান্দানি, আব্দুল করিম গণি ও জি টেন ডিজাইন এন্ড প্রিন্টার্সের ডিরেক্টর জরিদ মিয়া, ইমন আহমেদ’র হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন লন্ডন সিটির মেয়র প্রার্থী সোজান হল ও এপেক্স একাউন্টেসীর ডিরেক্টর তারেক মাহমুদ, তপন সাহা’র হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন লর্ড সোন ভ্যালী ও প্রাইম এস্টেট এজেন্টের ডিরেক্টর কাজী আরিফ এবং আব্দুস সালাম এর হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন মেয়র জ্যাৎস্না ইসলাম ও জেএমজি এয়ার কার্গোর চেয়ারম্যান মনির আহমদ। ১৪ তম আসর সম্পর্কে মন্তব্যকালে হুজহু’র প্রতিষ্ঠাতা, বাংলা মিরর এর সম্পাদক আব্দুল করিম গণি জানান, নতুনত্ব নিয়েই আমাদের এই প্রকাশনা প্রতি বছর কমিউনিটির সামনে উপস্থাপন করে আসছি। হুজহু’র ২০২৩ সালের এই প্রকাশনায় বরাবরের মতো স্থান পেয়েছেন রাজনীতি, সিভিল সার্ভিস, ব্যবসা, মিডিয়া, সমাজ সেবা এবং সংস্কৃতি, ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে  সফল বৃটিশ বাংলাদেশীরা।তিনি আরো বলেন, বৃটেনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের পরিচয় করিয়ে দিতে হুজহু’র এটি ধারাবাহিক প্রয়াস। প্রকাশনার দীর্ঘ তেরো বছর অতিক্রম করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং সবার সহযোগিতা থাকলে আমাদের এই প্রচেষ্ঠা অব্যাহত থাকবে। এই উদ্যোগ শুধুমাত্র সফল মানুষদের পরিচিতি তুলে ধরা নয়, বরং ভবিষ্যত প্রজন্মকে শেকড়ের সাথে সেতুবন্ধন এবং ভালো কাজে উৎসাহ প্রদান  ও অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।তিনি আরো বলেন, হুজহু’র প্রকাশনায় আমাদের কমিউনিটির যোগ্যতা সম্পন্ন সফল ও সৃজনশীল মানুষদের কর্ম তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেক মেধা, কষ্ট ও শ্রমের বিনিময়ে যারা এই কমিউনিটিকে বৃটেনের মূলধারায় নিয়ে এসেছেন, তাদের ঘাম ঝড়ানোর গল্প ধারাবাহিকভাবে লিপিবদ্ধ করে আসছি।

হুজহু’র প্রকাশনা ও এওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের ১৪তম আসরের মূল সহযোগিতায় ছিল মেরিডিয়ান গ্র্যান্ড। এতে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল— চ্যানেল এস, জি টেন ডিজাইন এন্ড প্রিন্টার্স, ইমপ্রেস মিডিয়া। ইভেন্ট পরিচালনায় পার্ল এডভারটাইজিং এবং একমাত্র চ্যারিটি পার্টনার হিসেবে ছিল ইকরা ইন্টারন্যাশনাল। সহযোগি পার্টনার ছিল ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউড (ডব্লিউ পিসি) এবং স্পন্সরে ছিল — প্রাইম এস্টেট এজেন্ট, ড্রিম স্পা, জেএমজি এয়ার কার্গো, এপেক্স একাউন্টেন্সী, ইউরোশিয়া ফুড সার্ভিস, ইকো ইনোভেশনস, রেক, ইউকে এনার্জি, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড। এছাড়াও বিজ্ঞাপন সহযোগিরা হচ্ছে — ভ্যানটেজ এক্সিডেন্ট ম্যানেজম্যান্ট, ইউনি সফট, প্রিন্ট আর্ট ফর ইউ, সুলতান ক্যাটারার্স, কুশিয়ারা ট্রেভেলস, ডিজিকম, কার প্ল্যানেট, জেড কোচেজ লন্ডন, লেয়ার ভিউ অটো গ্রুপ লিমিটেড, এবিএম মৌলভীবাজার।

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner