কমিউনিটি ১৯ নভেম্বর ২০২৫

টাওয়ার হ্যামলেটসে শিশুদের কাছে বিপজ্জনক পণ্য ও অ্যালকোহল বিক্রি, তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৩,০০০ পাউন্ড অর্থদন্ড

post

টাওয়ার হ্যামলেটসে শিশুদের কাছে বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্য ও অ্যালকোহল বিক্রির কারণে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যেখানে মোট জরিমানার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে £১৩,০০০-এর বেশি। কাউন্সিলের ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস টিম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগিতায় আন্ডারকভার টেস্ট পারচেজের মাধ্যমে এসব বেআইনি কার্যক্রম শনাক্ত করে। বরোর তরুণদের ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য থেকে সুরক্ষা দেওয়ার চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসাবে উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে।

চলতি ২০২৫ সালের পয়লা মার্চ, হোয়াইটচ্যাপেল রোডে অবস্থিত হোয়াইটচ্যাপেল এসেনশিয়াল হাউজওয়ার নামে ব্যবসা পরিচালনাকারী হোয়াইটচ্যাপেল পাউন্ডশপ লিমিটেড এক ১৬ বছর বয়সি স্বেচ্ছাসেবী অর্থাৎ ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ড বিভাগের আন্ডারকভার ক্রেতার কাছে নকআউট কস্টিক সোডা নামের ক্ষয়কারী রাসায়নিক বিক্রি করে। সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডযুক্ত এই পণ্যের বোতলে স্পষ্টভাবে বয়সসীমা উল্লেখ থাকলেও, কোম্পানির পরিচালক মি. আব্দুল আলিম পরিচয় যাচাই না করেই বিক্রি করেন। 

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে থেমস ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে কোম্পানি ও পরিচালক উভয়েই দোষ স্বীকার করলে আদালত কোম্পানিকে ৪,০০০ পাউন্ড জরিমানা, ১,৬০০ পাউন্ড ভিকটিম সারচার্জ এবং মামলা খরচ বাবদ ৬০০ পাউন্ড, আর মি. আলিমকে ৬৯২ পাউন্ড জরিমানা, ২৭৭ ভিকটিম সারচার্জ পাউন্ড এবং মামলা খরচ বাবদ ৬০০ পাউন্ড প্রদানের আদেশ দেন।

একই দিনে ওয়াটনি মার্কেটের ডলফিনস নামের দোকানে আরেকটি টেস্ট পারচেজে দেখা যায় যে নকআউট ড্রেনস, টয়লেটস এন্ড ইউরিনালস ক্লিনার্স নামের ক্ষয়কারী রাসায়নিক এক শিশুর কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তদন্তে জানা যায়, দোকানে অপ্রাপ্তবয়সীদের কাছে বিক্রি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছিল না। দোকানের কর্মী মি. মোহাম্মদ মাদানি এবং ব্যবস্থাপক মি. মোহাম্মদ মিয়া - উভয়েই অফেন্সিভ উইপেন্স এক্ট ২০১৯ -এর অধীনে দোষ স্বীকার করেন। আদালত মি. মাদানিকে ২২৪ পাউন্ড জরিমানা, ভিকটিম সারচার্জ বাবদ ৯০ পাউন্ড এবং মামলা খরচ বাবদ ২০০ পাউন্ড, আর মি. মিয়াকে ৩৬৫ পাউন্ড জরিমানা, ১৪৬ পাউন্ড ভিকটিম সারচার্জ এবং মামলা খরচ বাবদ ২,২১০.৪২ পাউন্ড প্রদানের আদেশ দেন।

অপর একটি পৃথক ঘটনায়, ১৬ আগস্ট ২০২৪ তারিখে মাইল এন্ড রোডের কো-অপ দোকানে ১২ বছর বয়সি শিশুর কাছে ৬৬০ মিলিলিটারের বিরা মোরেটি নামের অ্যালকোহল বিক্রি করা হয়। এটি বিক্রি করেন মি. ওয়াসালা নাওয়োদ বান্দারা, যিনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেও পরিচয়পত্র যাচাইয়ের নিয়ম অনুসরণ করেননি। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে তিনি আদালতে অনুপস্থিত থাকলেও দোষী সাব্যস্ত হন। আদালত তাকে অর্থদন্ড হিসাবে ৬৬০ পাউন্ড, ২৬৪ পাউন্ড ভিকটিম সারচার্জ এবং ১,১০০ পাউন্ড মামলা খরচ বাবদ প্রদানের আদেশ দেন।

কাউন্সিলের পাবলিক প্রোটেকশন ও ইন্টিগ্রেটেড এনফোর্সমেন্ট বিষয়ক ক্যাবিনেট মেম্বার কাউন্সিলর আবু তালহা চৌধুরী বলেন, "শিশুদের কাছে ক্ষয়কারী রাসায়নিক বা অ্যালকোহল বিক্রি করা শুধু বেআইনি নয়, বরং অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। এসব পণ্যের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি, তাই ব্যবসায়ীদের আইন মেনে চলা নিশ্চিত করা জরুরি।" তিনি আরও জানান, আইন লঙ্ঘন রোধে ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস টিম নিয়মিত টেস্ট পারচেজ পরিচালনা করতে থাকবে।

কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শিশুদের কাছে অ্যালকোহল, তামাক, ভ্যাপ বা বিপজ্জনক রাসায়নিকের মতো বয়সসীমা-নির্ধারিত পণ্য বিক্রি করছে - এমনটা যে কেউ সন্দেহ করলে, তা টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ওয়েবসাইটের (http://www.towerhamlets.gov.uk/tradingstandards) মাধ্যমে সম্পূর্ণ গোপনীয়ভাবে রিপোর্ট করা যাবে।

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner