বাংলাদেশ ২৪ জুলাই ২০২৫

সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

post

নিউজ ডেস্ক
টিভি নাইনটিন অনলাইন

ঢাকাঃ
বহুল আলোচিত সরকারি চাকরি আইন দ্বিতীয় সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।বুধবার (২৩ জুলাই) এটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। নতুন অধ্যাদেশে পূর্ববর্তী বিতর্কিত কিছু ধারা সংশোধন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপত্তি আমলে নেওয়া হয়েছে।সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ নতুন করে প্রতিস্থাপিত সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ডসংক্রান্ত বিশেষ বিধানসংক্রান্ত ৩৭ ক ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করেন, আইনসংগত কারণ ছাড়াই সরকারের কোনো আদেশ, পরিপত্র ও নির্দেশ অমান্য করেন বা এর বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করেন বা এসব কার্যে অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে প্ররোচিত করেন তাহলে সেটি সরকারি কর্মে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে।তাছাড়া ছুটি বা যুক্তিসংগত কোনো কারণ ছাড়া অন্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে নিজ কর্ম হতে অনুপস্থিত থাকলে বা বিরত থাকলে অথবা যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন তাহলে সেটি সরকারি কর্মে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অসদাচরণের জন্য সরকারি কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিত করা, বাধ্যতামূলক অবসর ও চাকরি থেকে বরখাস্ত করার মতো দণ্ড দেয়ার কথা বলা হয়েছে অধ্যাদেশে।এ বছরের ২৫ মে জারি করা সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ডসংক্রান্ত বিশেষ বিধানসংক্রান্ত ৩৭ ক ধারায় বলা হয়েছিল, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে; অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন; অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন; এবং যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন। এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে দোষী কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেয়া, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত করার দণ্ড প্রদানের কথা বলা হয়েছিল অধ্যাদেশে।

গতকাল যে সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে তাতে অনানুগত্যসংক্রান্ত ধারাটি বাদ দেয়ার পাশাপাশি অসদাচরণের দণ্ড হিসেবে চাকরি থেকে অপসারণের পরিবর্তে বাধ্যতামূলক অবসরের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া আগের অধ্যাদেশে অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাকে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরো সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়ার কথা বলা হলেও বর্তমানে সেটি সংশোধন করে তিনদিনের মধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে তদন্ত কমিটির সদস্যদের অভিযুক্ত ব্যক্তির চেয়ে জ্যেষ্ঠ হওয়া এবং অভিযুক্ত নারী হলে তদন্ত কমিটিতে একজন নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।আগের অধ্যাদেশে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করার সময়সীমার বিষয়ে কিছু বলা না থাকলেও সংশোধিত অধ্যাদেশে তদন্তের আদেশ পাওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার কথা বলা হয়েছে। তবে যুক্তিসংগত কারণে প্রয়োজন হলে একবারের জন্য তদন্তের সময়সীমা সাতদিন পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। এ সময়ের মধ্যেও যদি তদন্ত শেষ করা সম্ভব না হয় তাহলে নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।তাছাড়া তদন্ত কমিটি যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে না পারলে সেটি কমিটির সদস্যদের অদক্ষতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং এ অদক্ষতার বিষয়টি তাদের সরকারি কর্মচারী তথ্য বাতায়নে লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষণের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে চাকরি বিধিমালা অনুসারে দণ্ডমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।গত মে মাসে জারি করা অধ্যাদেশে অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীর কাছে নোটিস জারির বিষয়ে বলা হয়েছিল যে যদি অভিযুক্তের কাছে নোটিস জারি করা হয় কিংবা তার সর্বশেষ জ্ঞাত বাসস্থানের কোনো দৃষ্টিগোচর স্থানে লটকাইয়া জারি করা হয় অথবা অন্যূন ২টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হয় অথবা তার ই-মেইলে নোটিস পাঠানো হয় তাহলে সেটি এই ধারার অধীনে নোটিস যথাযথভাবে জারি করা হয়েছে বলে গণ্য হবে। তবে গতকাল জারি করা সংশোধিত অধ্যাদেশে এ ধারাটি বাদ দেয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner