বাংলাদেশ ২৬ মার্চ ২০২৫

৫৩ বছরেও মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি : তারেক রহমান

post

নিউজ ডেস্ক
টিভি নাইনটিন অনলাইন

ঢাকাঃ
"স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র থামেনি।দেশি-বিদেশি চক্রান্তে আজও আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন। কিন্তু সময় এসেছে—ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে গণতন্ত্রের পথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার!" বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের বাণীতে এই জোরালো আহ্বান জানান। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে যাওয়া বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার করুণ চিত্র।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "মানুষ শোষণমুক্ত, সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে লড়াই করেছিল।কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকেই স্বৈরাচারীরা বারবার সেই স্বপ্নকে পদদলিত করেছে। আজও কোটি মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল পায়নি।" তিনি কঠোর ভাষায় প্রশ্ন তোলেন,এই অধঃপতনের জন্য কে দায়ী? কেন ধ্বংস করা হলো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো?"বিএনপির ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা" ও "বাংলাদেশের আধুনিকায়নের স্থপতি" শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, তা ছিল ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। কিন্তু গণতন্ত্রের শত্রুরা কখনোই স্থায়ী শান্তি চায়নি। তারা একদলীয় শাসন জোরপূর্বক চাপিয়ে দিতে চেয়েছে।" বর্তমান সরকারকে "অবৈধ" আখ্যা দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, "ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সংবিধান থেকে শুরু করে বিচারব্যবস্থা—সবই এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে।অর্থনৈতিক সংকট প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, "দেশি-বিদেশি চক্রান্তে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ ধুঁকছে। রেমিট্যান্স, রপ্তানি, ব্যাংকিং খাত—সবই সংকটের মুখে। কিন্তু এর চেয়েও বড় সংকট আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত।" তাঁর মতে, "বিদেশি চাপে মাথা নত করা, বাংলাদেশকে ভূ-রাজনীতির ঘুঁটি বানানোর অপচেষ্টা—এসবই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার পরিপন্থী।তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন, "যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, তাদের জন্য এটি কেবল ইতিহাস নয়, বরং একটি দায়বদ্ধতা। স্বাধীনতা মানে শুধু পতাকা নয়; বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকারও। তোমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে স্বৈরাচারের মূলোৎপাটনে।" সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি আরও বলেন, "গণতন্ত্রের শত্রুরা কখনো প্রকাশ্যে আসে না। তারা আইনের মুখোশ পরে জনগণের আশা-ভালোবাসাকে পুঁজি করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে।রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. তানভীর হাসান মন্তব্য করেন, "তারেক রহমানের বক্তব্যে গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক সংকটের যে দিকগুলো উঠে এসেছে, তা জাতীয় আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে।" তবে সরকারপক্ষের প্রতিক্রিয়া ভিন্ন। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, "যারা নিজেরাই গণতন্ত্রকে বারবার পদদলিত করেছে, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা বেমানান। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অনন্য উদাহরণ।প্রাসঙ্গিক তথ্য হিসেবে বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি আয়বৈষম্যও বেড়েছে। গ্লোবাল ডেমোক্রেসি ইনডেক্স-২০২৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশ ৮৮তম অবস্থানে রয়েছে, যা "হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা" হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ হয়েছে।স্বাধীনতা দিবসে তারেক রহমানের এই বাণী রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটি স্পষ্ট যে, তাঁর বক্তব্যে স্বাধীনতার চেতনা পুনরুদ্ধারের যে আহ্বান এসেছে, তা জাতীয় বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাঁর কথায়, "স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব সবার।এটি শুধু আদর্শ নয়, বরং লড়াই করে অর্জনের বিষয়।"

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner