কমিউনিটি ২০ অক্টোবর ২০২৪

দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ জনপদ টাওয়ার হ্যামলেটস হচ্ছে কমিউনিটিগুলোর সংহতির আলোকবর্তিকা

post

— সর্বশেষ স্বাধীন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, টাওয়ার হ্যামলেটসের ৯০ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন পটভূমি থেকে এসেও একে অপরের সাথে ভালোভাবে মিলেমিশে থাকে।


— ৭/১০ হামলার বার্ষিকীতে নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান সমর্থন ও সম্মানের সংস্কৃতির জন্য কমিউনিটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

একটি নতুন স্বাধীন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের মধ্যে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ স্থান হওয়া সত্ত্বেও, টাওয়ার হ্যামলেটস দেশের সবচেয়ে বেশি কমিউনিটি সংহতির হার গুলোর একটি হওয়ার গৌরবজনক ঐতিহ্য রয়েছে।

সর্বশেষ বার্ষিক রেসিডেন্টস্ সার্ভে অর্থাৎ বাসিন্দাদের মধ্যে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, ১০ জনের মধ্যে ৯ জন (৯০ শতাংশ) একমত যে ‘এই জনপদটি এমন একটি এলাকা যেখানে বিভিন্ন পটভূমি অর্থাৎ নৃতাত্বিক পরিচয় থেকে আসা মানুষ একে অপরের সাথে ভালোভাবে মিলেমিশে থাকেন’ — যা গত বছরের গড় হার ৮৬ শতাংশ থেকে বেড়েছে। এটি আরও উল্লেখযোগ্য এ কারণে যে, টাওয়ার হ্যামলেটস হচ্ছে রাজধানী লন্ডনের অভ্যন্তরীণ একটি বোরো, যা দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ স্থান এবং যেখানে জনসংখ্যা দ্রুততম হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে টাওয়ার হ্যামলেটসের জনসংখ্যা ২২.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এই বরায় গড়ে একটি ফুটবল মাঠের আকারের এলাকায় ১১২ জন মানুষ বসবাস করে, যেখানে জাতীয় গড় হচ্ছে মাত্র তিনজন (২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)।

টাওয়ার হ্যামলেটসে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় নৃতাত্বিক পরিচয়ের জনসংখ্যা। দেশের বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্টির বাস এই বারায় এবং এর পাশাপাশি ইহুদি, সোমালি, বাঙালি এবং ঐতিহ্যবাহী শ্বেতাঙ্গ ইংরেজ কমিউনিটির গর্বিত উত্তরাধিকার রয়েছে এই জনপদের। এখানে ১৩৭ টিরও বেশি ভাষায় কথা বলা হয়, এবং ৪৩ শতাংশ বাসিন্দা ২০০টিরও বেশি ভিন্ন ভিন্ন দেশে জন্মগ্রহণ করেছেন।

মধ্যপ্রাচ্যের চলমান পরিস্থিতি দেশব্যাপী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। টাওয়ার হ্যামলেটসেও এর ব্যতিক্রম নয়। এর সফলতার একটি বড় অংশ হলো ইন্টার ফেইথ ফোরামের মতো গোষ্ঠীগুলোর কাজ, যা বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের একত্রিত করে আমাদের বৈচিত্রময় সম্প্রদায়গুলোর সঙ্গে পরামর্শ ও সহযোগিতা করতে কাজ করে। কাউন্সিল টাওয়ার হ্যামলেটস টেনশন মনিটরিং গ্রুপকেও তত্ত্বাবধান করে, যারা নিয়মিত বৈঠক করে সংহতি, কমিউনিটির অনুভূতি এবং কীভাবে বিভিন্ন বিষয় বাসিন্দাদের ওপর প্রভাব ফেলে তা নিয়ে আলোচনা করে।

কাউন্সিল ‘নো প্লেস ফর হেট’ প্রচারণাও পরিচালনা করে আসছে। এ পর্যন্ত ৫,৮৫০ জন ব্যক্তি এবং ২০৭টি সংস্থা এই প্রচারণায় সাইন আপ করেছে, যা পারস্পরিক সম্মান ও সহনশীলতাকে উৎসাহিত করে এবং বছরের পর বছর বরোর বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ধর্মকে উদযাপন করে।

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, “কমিউনিটির সংহতির জন্য একটি বাতিঘর হচ্ছে টাওয়ার হ্যামলেটস। আমরা দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ স্থান এবং সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় স্থানগুলির মধ্যে একটি, তবুও আমাদের বাসিন্দাদের ৯০ শতাংশ বলেন যে তারা একে অপরের সাথে ভাল আছেন।

মেয়র বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত মানুষের কাছে খুবই আবেগপ্রবণ ইস্যূ, তবুও গত ১২ মাসে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটের লোকেরা একসাথে ভালো ভাবে চলছেন — এমন বাসিন্দাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে দেখেছি। এটা সম্ভব হয়েছে কমিউনিটির উত্তেজনা পর্যবেক্ষণ এবং জনগণকে একত্রিত করার জন্য কাউন্সিল যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার ফলে। সর্বোপরি এটি আমাদের বাসিন্দাদের নিজেদেরই টেস্টামেন্ট, যারা একে অপরকে সম্মান করে এবং সমর্থন করে। লোকেরা টাওয়ার হ্যামলেটসে বসবাস করতে পেরে গর্বিত এবং আমরা তাদের সেবা করতে পেরে গর্বিত।”

টাওয়ার হ্যামলেটস ইন্টার ফেইথ ফোরামের চেয়ার সুফিয়া আলম বলেছেন, “বার্ষিক রেসিডেন্টস সার্ভে থেকে সাম্প্রতিক ফলাফল দেখে আমি গর্বিত, যা দেখায় যে টাওয়ার হ্যামলেটসে সম্প্রদায়গুলি কতটা ঐক্যবদ্ধ।”

তিনি বলেন, “অসুবিধা বা অস্থিরতার সময়ে, বৈচিত্রতা কীভাবে আমাদের সম্প্রদায়কে কাছাকাছি নিয়ে আসতে পারে সেই শক্তিমত্তা তুলে ধরে। আমাদের এই বরায় ঘৃণার কোন স্থান নেই, যা নিয়ে আমরা গর্বিত। আমরা সকল  ধরণের ঘৃণা মোকাবেলায় বাসিন্দাদের সমর্থন করার জন্য কাজ চালিয়ে যাব এবং বৈষম্যকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে সক্রিয় হতে থাকব।”

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner