শীর্ষ খবর ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অভ্যুত্থানে শহীদ ৮৭৫ জনের মধ্যে ৪২২ জন বিএনপির: ফখরুল

post

নিউজ ডেস্ক

টিভি নাইনটিন অনলাইন

ঢাকাঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ৮৭৫ জন নিহত হয়েছেন বলে একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ৪২২ জন বিএনপির নেতাকর্মী বা সমর্থক বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।আজ রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, “স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন থেকে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী রেহাই পায়নি। মামলা হয়েছে দেড় লাখ, আসামি ৬০ লাখ। নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের পিতা, সন্তান এমনকি স্ত্রীকেও ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ।বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এবার সরকার পতনের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ৮৭৫ জনের মধ্যে ৪২২ জনই বিএনপির নেতাকর্মী।তিনি বলেন, “সব মত ও পথের ব্যক্তির পরিচয় যাই হোক না কেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রতিবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি। ৫ আগস্ট গণতন্ত্রের পথ সুগম হয়েছে। দেশের মানুষের আকাঙ্খার প্রতিফলন হিসেবে রাজপথে নেমে এসেছে বিএনপি। আন্দোলনের কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য নয়, বরং দেশের মানুষের জন্য রাজপথে নেমেছে বিএনপি।তিনি বলেন, “যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, এর প্রকাশ ছিল ১০ ডিসেম্বরের ১০ দফায়। শেষে এক দফা আন্দোলন শুরু করে সেসময় বিএনপির সিনিয়র নেতাসহ ১০ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় দলীয় কার্যালয়।বিএনপির অবদানকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ১৬ জুলাই আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে সারা দেশে। ১৯ তারিখ বন্ধ হয় বিএনপি কার্যালয় গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে। বহুমাত্রিক নিপীড়ন উপেক্ষা করে বিএনপি রাজপথে ছিল। সাভারের গান পাউডার দিয়ে যে লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে তার মধ্যে বিএনপি নেতাও ছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারের ওপর অত্যাচার চালিয়ে, লাখ লাখ নেতাকর্মীদের ঘরছাড়া করেছে।” বলেন বিএনপি মহাসচিব।তিনি আরও বলেন, “ঢাকা শহরের হকার রিকশাচালক, সিকিউরিটি গার্ডসহ নিম্ন শ্রেণির কাজ যারা করে তাদের বেশির ভাগই বিএনপি নেতাকর্মী। বিএনপি নেতাকর্মীদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা বর্বরতার কালো অধ্যায় হিসেবে থেকে যাবে। নেতাকর্মীদের ওপর যে নিপীড়ন তা বর্বরতার উদাহরণ হয়ে থাকবে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে সরকারের যে নিপীড়ন তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যামে আলোচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে এমন অত্যাচার নিপীড়ন লাগাতার চালিয়ে গেছে। আজ যে বিজয়, এ বিজয়ের পেছনে রয়েছে অসংখ্য মানুষের আর্তনাদ।বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এগুলো শুধু পরিসংখ্যান নয় বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপির অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে যুক্ত ছিল তাদের আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি না দিলে তা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার। রাষ্ট্র সংস্কার করে প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বিএনপির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে গড়ে তুলতে হবে নিরাপদ ও মেধাভিত্তিক সমাজ।তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে প্রয়োজন সকলের মতামত নিয়ে ভোটের পরিবেশ তৈরি করে নির্বাচন দেওয়া। আমরা বাধা দেখতে পাচ্ছি, ঐক্যের জন্য উপযোগী নয় এমন অনেক কথা বলা হচ্ছে। এই মুহূর্তে দরকার ঐক্য। চক্রান্ত চলছে। ধৈর্য্য ধরে সহনশীলতার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার যে কাজ ধরছে তা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার।এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মুদ্রাসহ এপিঠ ও ওপিঠ হওয়ার সুযোগ নেই। বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা দল আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করা দল।এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ড. আব্দুল মঈন খান, সালাউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner