নিউজ ডেস্ক,টিভি নাইনটিন অনলাইন
স্পোর্টস ডেস্কঃ দুই দলের সামনেই সহজ সমীকরণ ছিল। জিতলেই সেমিফাইনাল, হারলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বিদায়। এমন অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কাঁদিয়ে শেষ চারে উঠলো দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জয়ে গ্রুপ পর্বের পর সুপার এইটেও সব ম্যাচে অপরাজিত রইল প্রোটিয়ারা।একটা সময় তো মনে হচ্ছিল শেষ পর্যন্ত কপাল পুড়তে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকারই। তবে না, শেষ পর্যন্ত সেটি হতে দেননি রাবাদা-জেনসেন। কঠিন চাপ জয় করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিয়েছেন তারা। নিশ্চিত করেছেন সেমিফাইনাল। প্রোটিয়ারা জয় তুলেছে ৫ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখে।আগের দুটি আইসিসি বিশ্বকাপে জায়গা হয়নি দু’বারের বিশ্বকাপজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে সেসব পেছনে ফেলে এবার নতুন এক গল্প লিখতে চেয়েছিল ক্যারিবিয়রা। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের মোহ ভুলে নিজের দেশের ক্রিকেট ঐতিহ্য ফেরাতে বিশ্বকাপ জয়ের পণ করে মাঠে নেমেছিল, রোভম্যান পাওয়েল, নিকোলাস পুরান ও আন্দ্রে রাসেলরা। বিশ্বকাপ মিশনটা দারুণ কাটছিলও তাদের। তবে সেই যাত্রার মাঝ পথেই এবার থামতে হলো তাদের। ক্যারিবিয়দের স্তব্ধ করে সেমিফাইনালে পা রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সুপার এইটে সেমি নিশ্চিতের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৩৫ রানে থামিয়ে ৩ উইকেটের জয় তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ধরে রেখেছে চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত না হারার রেকর্ডটা।অথচ, সেমি নিশ্চিতের ম্যাচে লড়াই করার মতো পুঁজিও স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তাদের ইনিংস থামে মাত্র ১৩৫ রানে। পুঁজি ছোট হলেও লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রেজা হেন্ড্ররিকস ও কুইন্টন ডি কককে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাসেল। তবে সেই চাপ তারা ধরে রাখতে পারেনি বৃষ্টির কারণে। ২ ওভারে ২ উইকেট খরচায় ১৫ রান তোলার পর শুরু হয় বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি থামলে আর চাপটা ধরে রাখতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।বৃষ্টির পর ৩ ওভার কমে ম্যাচ নেমে আসে ১৭ ওভারে। সঙ্গে প্রোটিয়াদের লক্ষ্য কমে হয় ১২৩। এরপর পরিস্থিতি বুঝেই ব্যাট চালিয়েছে প্রোটিয়ারা। অযাচিত ঝুঁকি নেয়নি। মাঝে এইডেন মার্করাম ১৫ বলে ১৮ রান ও হেনরিখ ক্লাসেন ১০ বলে ২২ রান করে ফিরলেও ততক্ষণে জয়ের ভিত গড়া হয়ে গেছে তাদের। তবে এরপর ম্যাচ দেখেছে বহু নাটকীয়তা। তবে সেই নাটকের শেষ দৃষ্যপটে জয়টা হয়েছে প্রোটিয়াদেরই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা চাপ প্রয়োগ করলেও শেষ পর্যন্ত পেরে উঠেননি। দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। টানা তিন জয়ে গ্রুপ-চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিশ্চিত করে সেমির টিকিট। যাতে করে বিদায় নিশ্চিত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এই গ্রুপ থেকে সেমির টিকিট আগেই কেটে ফেলেছে ইংল্যান্ড।এর আগে সেমি নিশ্চিতের ম্যাচে, শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে ক্যারিবিয়দের অন্যতম দুই ব্যাটার শাই হোপ ও নিকোলাস পুরান ফিরেন প্রথম দুই ওভারের মধ্যেই। হোপ শূন্য রানে ও পুরান ১ রানে। ভয়াবহ শুরু যাকে বলে। এরপর ৮১ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে তুলেন কাইল মায়ার্স ও রোস্টন চেজ। মায়ার্স ৩৪ বলে ৩৫ রান করে ফিরলে ফের ধস নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটে। অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল ফিরে যান ১ রানে। এরপর শেরফন রাদারফোর্ড খুলতে পারেননি রানের খাতা। ৪২ বলে ৫২ রান করে চেজ ফিরলে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব বর্তায় আন্দ্রে রাসেলের কাঁধে। ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালানো শুরুও করেছিলেন রাসেল। তবে এদিন সেই তাণ্ডব দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়নি প্রোটিয়ারা। ৯ বলে ১৫ রান করে রাসেল ফিরেন রান আউটের শিকার হয়ে। সেই ধাক্কা সামলে আর চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দাঁড় করাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের ইনিংস থেমেছে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানে। প্রোটিয়া বোলারদের মধ্যে ২৭ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেছেন তাবরেজ শামসি।