নিউজ ডেস্ক,টিভি নাইনটিন অনলাইন
স্পোর্টস ডেস্কঃ ন্যাপকিন একটি সাধারণ জিনিস! খাওয়ার পর হাত মুছে যে কেউ বিনা সংকোচে ফেলে দেয়। যদি সেই ন্যাপকিনে থাকে লিওনেল মেসির স্বাক্ষর। অবশ্যই তা হয়ে উঠবে মহামূল্যবান। হয়েছেও তাই। শুক্রবার (১৮ মে) ব্রিটিশ অকশন হাউস বোনহামসের মাধ্যমে বিক্রি হয়ে গেল সেই মেসি-বার্সেলোনার ঐতিহাসিক প্রথম চুক্তির প্রমাণপত্র।দাম উঠেছে ৯ লাখ ৬৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশ মুদ্রায় যার পরিমাণ ১১ কোটি ২৯ লাখ ৯৩ হাজার ২০১ টাকা। মেসি বার্সেলোনায় যোগ দেন মাত্র ১৩ বছর বয়সে। এর আগে একটি হোটের কক্ষে মেসির বাবা জর্জের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন বার্সেলোনার তৎকালীন ক্রীড়া পরিচালক কার্লেস রেক্সাস। তখনও তৈরি হয়নি মেসি-বার্সার চুক্তির কাগজপত্র।তত দিনে মেসির নাম অল্পবিস্তর ছড়াতে শুরু করেছে। আর্জেন্টিনার রোজারিওতে জন্ম নেওয়া মেসির প্রতিভা সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা হয়ে গিয়েছিল রেক্সাসের। প্রতিভাবান এই ফুটবলারকে কোন মতে হাতছাড়া করতে চাননি তিনি। যে কোনো উপায়ে মেসির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে চেয়েছিলেন রেক্সাস।সেই হোটেলের একটি ন্যাপকিন পেপারে মেসির সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষর করেন তিনি। সেই ন্যাপকিনে লেখা অনুযায়ী, ‘বার্সেলোনায় ১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে মিনগেলা, আর্জেন্টিনায় মেসির এজেন্ট হোরাশিও আর বার্সার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে পূর্ণ দায়িত্বের সঙ্গে নির্দিষ্ট অঙ্কে লিওনেল মেসিকে স্বাক্ষর করানোর ব্যাপারে একমত হওয়া গেল।’এ সময় নিজের তত্ত্বাবধানে মেসির যত্ন নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন রেক্সাস। পরে এক সাক্ষাৎকারে রেক্সাস জানিয়েছিলেন, দুই পক্ষ মৌখিকভাবে সম্মত হওয়ার পর হাতের কাছে আর কিছু ছিল না। পরে হোটেলে ন্যাপকিনে স্বাক্ষর করিয়েছিলেন মেসিকে। মেসির নাম থাকলে বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বাড়বে বলে র্জজকে (মেসির বাবা) রাজি করিয়েছিলেন তিনি।ধীরে বার্সেলোনা তথা বিশ্বের সর্বকালের সেরা ফুটবলার হয়ে উঠেন মেসি। বার্সার জার্সিতে জিতেছেন ক্লাব ফুটবলের সম্ভাব্য সব শিরোপা। জাতীয় দলের জার্সিতে বিশ্বকাপসহ জেতেন সব আন্তর্জাতিক শিরোপা।২০২১ সালে আর্থিক সংকটে নিজেদের ক্লাব ইতিহাসের সেরা ফুটবলারকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় বার্সেলোনা। এর আগে স্প্যানিশ জায়ান্টদের জার্সিতে ৭৮২ ম্যাচে গোল করেন ৬৭৪টি। ২০০৪ থেকে ২০২১ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিসহ বার্সাকে জেতান ৩৫ শিরোপা।ব্যক্তিগত অর্জনও কম নয় বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে খেলা আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির। সর্বোচ্চ ৮ বার জিতেছেন বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার ব্যালন ডি’অর। যার শুরুটা হয়েছিল নীল কালির কলমে লেখা একটি ন্যাপকিনে। কারণ এই চুক্তির প্রতিশ্রুতির পর স্প্যানিশ ক্লাবে সৃষ্টি হয় বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার।যিনি বাঁ-পায়ের ফুটবলীয় জাদুতে মেহিত করেন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি ফুটবল প্রেমিদের। এত দিন সেই ন্যাপকিন অ্যান্ডোরার একটি ভল্টে লুকিয়ে রাখা ছিল। অবশেষে নিলামে ওঠে সেই ন্যাপকিন, এবং বিক্রিও হয়ে গেল উচ্চমূল্য। আর এখন এটি ফুটবল ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশও!