নিউজ ডেস্ক,টিভি নাইনটিন অনলাইন
ঢাকাঃ সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে মিরপুর পল্লবীতে সদ্য কারামুক্ত ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হককে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।তিনি বলেন, ‘সরকার যদি সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাহলে তাদের সামনে একটি পথ খোলা আছে, সেটা হলো- এই ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে দেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষণা করুক। এটাই আমরা চাই। প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আজকে সরকার ফিরে আসুক। এছাড়া এই সরকারের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।আপনারা কি মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মঈন খান বলেন, ‘মধ্যবর্তী নির্বাচন বলে কোনো কথা নেই। যে নির্বাচন হয়েছে, এটা কোনো নির্বাচন হয়নি। আর শুধু বিএনপির নয় আওয়ামী লীগের ভোটাররাও এই নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে বর্জন করেছে।এটা কোনো নির্বাচন নয়, এটা প্রহসন, নাটক ও সার্কাস। আজকে যে সংসদ, সেটা একটা নাট্যশালায় পরিণত হয়েছে। সুতরাং সরকার যে পথে হাঁটছে, সেটা সঠিক পথ নয়।’‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে লাঠিতে ভর দিয়ে নালিশ করতে গিয়েছেন’- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘মহাসচিব একজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি।কোনো নীতিবান লোক একজন সিনিয়র সিটিজেন সম্পর্কে এ ধরনের কথা বলতে পারেন, এটা আমি বিশ্বাস করি না যে- কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের কথায় এটাই প্রমাণিত হয়েছে, মহাসচিব তিন মাসের অধিক কারাগারে ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা আমরা সবাই জানি। সেই অবস্থায় যদি তিনি একটি লাঠি নিয়ে বেরিয়ে থাকেন সেটা তো তার যে প্রতিজ্ঞা, তার যে সংগ্রামের ব বহির্মুখী যে প্রত্যাশা সেটা তো প্রমাণ করে যে, কোনো রকমের জুলুম, নির্যাতন ও অত্যাচার কাউকে থামিয়ে রাখতে পারে না। আর বিদেশিদের সঙ্গে কে কথা বলে না? আমরা তো দেখেছি, সরকারও বিদেশে গিয়ে সহযোগিতা চেয়েছে এবং বন্ধুত্ব করতে চায়।আমরা পত্রিকায় দেখেছি। সরকার নিজেই প্রকাশ্যে বলেছে।বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘এই নির্বাচনের কথা বলছেন? এই নির্বাচনের কথা আমি বলতে চাই না। সরকারের প্রভাবশালী একজন মন্ত্রী, তিনি নিজেই নির্বাচনে সহযোগিতা করার জন্য আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আর নির্বাচনে আগে আমাদের পূর্ববর্তী মন্ত্রী বন্ধু রাষ্ট্রে গিয়ে সহায়তা চেয়েছিলেন। সুতরাং আজকে কে বিদেশিদের কাছে গিয়ে কি বলছে, না বলছে-সেগুলো সরকার নিজেই প্রকাশ করে দিয়েছে। তারা নিজেই স্বীকার করেছে। বিদেশিদের সঙ্গে মানুষ কথা বলবে না কেন? আমরা তো কারো বিরোধিতা করি না। বিএনপি আজ বিদেশি সঙ্গে বথা বলবে, এতে অপরাধের কি হলো? সেটা তো আমরা বুঝতে পারি না। দেশের রাজনীতিকেই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।আজকে বাংলাদেশের রাজনীতির যে সমস্যা, সেটা হচ্ছে- প্রতিহিংসার রাজনীতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই যে আমিনুল তিন মাসের উপর জেলে ছিলেন, আমাদের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কেউ বাদ যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে তারা নিজেরাই স্বীকৃতি দিয়েছে যে, এই ২৫ থেকে ২৬ হাজার বিএনপির নেতাকর্মীদের জেলের ভিতরে ঢুকিয়ে না রাখতো তাহলে সরকার তাদের পতন তারা বন্ধ করতে পারত না।মঈন খান বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে কিভাবে রাজনীতি চলতে পারে? এই সরকার কি চায়? তারা কি নিজেরা জানে? তারা ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয় গিয়ে দেশ থেকে অর্থ বিদেশে পাচার করে দিয়ে বিলাসবহল জীবন-যাপন করবে। এটাই কি রাজনীতির উদ্দেশ্য? আজকে আওয়ামী লীগকে উপলব্ধি করতে হবে যে, এভাবে সহিংসতার রাজনীতি দিয়ে এদেশ কোনো পর্যায়ে কোথাও গিয়ে পৌঁছবে না। এদেশের নৈতিকতা, প্রশাসন ও সমাজ ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা এবং সংসদ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। দুর্নীতিতে ছেড়ে গেছে।’