গত ৮ই ফেব্রুয়ারী ২০২৪, বাংলা ভাষার শিক্ষক, মোঃ নুরুল হকের ঢাকার গাজীপুরে তাঁর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এক বিবৃতে পূর্ব লন্ডনের কমিউনিটি একটিভিস্টরা শোক প্রকাশ করেছেন। তারা তাঁর রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া ও প্রার্থনা কামনা করেন । জনাব নুরুল হক সাহেব বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পর, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে আনোয়ারা বেগম হক - সহধর্মিণী কে নিয়ে বৃটেনে পাড়ি জমান। তিনি ৭০ দশকের মাঝামাঝি লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস বরোয় বসবাস শুরু করেন। তিনি বেঙ্গলি হাউজিং এ্যাকশন গ্রুপের একজন সদস্য হিসেবে গৃহহীনদের আন্দোলনেরম অংশীদার ছিলেন এবং নিজে বাংলা টাউনের অন্তর্ভুক্ত প্রেলহ্যার্ম বিল্ডিং এ একজন সস্ত্রিক 'স্কুয়াটার' ( SQUATTER ) হিসাবে বাস করতেন।এরপরে এই এলাকায় নিজে বাড়ি কিনেন।
বিগত পঞ্চাশ বছর তিনি পূর্ব লন্ডনের বাংলাটাউন নামক জনপদের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন।এছাড়া ও তিনি একজন সমাজকর্মী ছিলেন এবং বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।পূর্ব লন্ডনের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য অর্জনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, স্থানীয় লেবার পার্টি যখন বাঙালিদের সদস্য পদ দিতো না, তখন সামাজিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে " পিপলস অ্যালায়েন্স অব ইষ্ট লন্ডন " নামে একটি স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠন করা হয়েছিল, স্থানীয় নির্বাচনে কয়েকজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং এদের মধ্যে অন্যতম নুরুল হক সাহেব সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিজয়ী হোন ১৯৮২ ইং সালে ।
নুরুল হক সাহেবের শ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে তাঁর নিজের উদ্যোগে বাংলাটাউনে অবস্থিত ইষ্ট অ্যান্ড কমিউনিটি স্কুল। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শতশত ছেলে ও মেয়ে বাংলা,আরবি এবং সাপ্লিমেন্টারী শিক্ষার সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছেন। শিক্ষানুরাগী নুরুল হক সাহেব জীবনের শেষ পর্যায়ে তাঁর বাসস্থান গাজীপুরে, ঢাকা তাঁর স্ত্রীর নামে 'আনোয়ারা প্রাইমারি ও হাই স্কুল ' স্থাপন করেন।তাছাড়া তার জন্মভূমি নোয়াখালীর সুনাগাজি গ্রামে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন।
ব্যক্তিগতভাবে নুরুল হক সাহেব একজন ভদ্রলোক ছিলেন। পূর্ব লন্ডনের সাধারণ মানুষ, তাদের একজন আপনজনকে হারালো।আমাদের সমাজে নুরুল হক সাহেবের অবদানের মূল্যায়ন প্রয়োজন বলে বিবৃতে বলেছেন রাজন উদদীন জালাল, সিরাজুল হক সিরাজ, রফিক উল্লাহ, একে আজাদ কনর , আকিকুর রহমান , নূর উদদীন আহমেদ ও আনসার আহমেদ উল্লাহ প্রমুখ।