নিউজ ডেস্ক,টিভি নাইনটিন অনলাইন
স্পোর্টস ডেস্কঃ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্র শুরু করবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে।ইনজুরির কারনে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলতে পারছেন না অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও দুই পেসার তাসকিন আহমেদ-এবাদত হোসেন। এজন্য দলের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে ছাড়াই এই টেস্টে খেলতে নামবে টাইগাররা। এছাড়াও এই সিরিজে খেলছেন না সিনিয়র ওপেনার তামিম ইকবাল এবং লিটন দাস। পিতৃত্বকালীন ছুটি পেয়েছেন লিটন। দলে একমাত্র সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে আছেন মুশফিকুর রহিম। তারুণ্য নির্ভর অনভিজ্ঞ দলকে নেতৃত্ব দিবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। চলতি বছর আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট খেলে দ’ুটিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দর। আইরিশদের বিপক্ষে ৭ উইকেটে এবং আফগানদের বিপক্ষে রেকর্ড ৫৪৬ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। যা তেকে প্রমান মেলে বড় ফরম্যাটে টাইগাররা সঠিক পথেই রয়েছে।যদিও বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। এখন পর্যন্ত ১৩৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলে মাত্র ১৮টিতে জয়, ১০২টিতে হার এবং ১৮টিতে ড্র করেছে বাংলাদেশ। শতকরা জয় ১৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।লংগার ভার্সনে টাইগার দলের মান মিলবে নিউজিল্যান্ড টেস্ট দিয়েই।সদ্য শেষ হওয়া ওয়াডে বিশ^কাপের পর এই টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। বিশ^কাপের সেমিফাইনালেই যাত্রা শেষ হয় নিউজিল্যান্ডের। অন্যদিকে, ৯ ম্যাচে মাত্র ২ জয়ে লিগ পর্ব থেকেই বিশ^কাপ শেষ করে বাংলাদেশ।
২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে টেস্ট সিরিজ খেলবে নিউজিল্যান্ড। গত ১০ বছরে অন্য দুই ফরম্যাট- ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এই সময়ের মধ্যে টেস্ট সিরিজ খেলতে তিনবার নিউজিল্যান্ড সফর করেছে টাইগাররা।বাংলাদেশের মাটিতে সর্বশেষ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ০-০ সমতায় শেষ করেছিলো নিউজিল্যান্ড। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন দেশের বিপক্ষে টেস্ট ড্র করলেও, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরমেন্স দিয়ে ঐ দু’টি টেস্ট সমতায় শেষ করেছিলো টাইগাররা। ঐ দুই টেস্টে দারুণ ব্যাটিং প্রদর্শন করেছিলো স্বাগতিকরা। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কখনওই টেস্ট জিততে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু গেল বছর মাউন্ট মাউঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মত টেস্ট জয়ের নজির গড়ে টাইগাররা। যা এখন পর্যন্ত কিউইদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট জয় বাংলাদেশের।বাংলাদেশের মাটিতে সীমিত ওভারের ম্যাচে দীর্ঘদিন জয়হীন ছিলো নিউজিল্যান্ডও। বিশ্বকাপের আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয়ের আগে, ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশের মাটিতে জয়হীন ছিল কিউইরা।বাংলাদেশের মাটিতে যেকোন ফরম্যাটে ম্যাচ জয়ে ওয়ানডে সিরিজে জয় বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিবে নিউজিল্যান্ডকে। অন্য দিকে সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় স্বাগতিক দল কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারলেই খুশি থাকবে। সিলেটের এই ভেন্যুতে একটি মাত্র টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৮ সালের সেই টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে ১৫১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। যেহেতু ঐ ম্যাচের পর এই ভেন্যুতে কোন টেস্ট খেলেনি, এজন্য উইকেট সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই।কিন্তু স্পিনারদের নিয়েই নিজেদের পরিকল্পনা সাজানোর লক্ষ্য বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের। দলে একাধিক স্পিনার থাকায় বাংলাদেশ কিছুটা শক্তিশালী হয় মাঠে নামবে বাংলাদেশ । প্রথমবারের মতো দলে নেওয়া হয়েছে বাঁ-হাতি স্পিনার হাসান মুরাদকে। সেই সাথে দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে অফ-স্পিনার নাঈম হাসানকে।ম্যাচচ পুর্ব এক সংবাদ সম্মেরনে আজ সিলেটে শান্ত বলেন, ‘আমি মনে করি না, উইকেট সম্পর্কে কিছু বলা ঠিক হবে। আমরা যতটা সম্ভব ধারণা পেয়েছি। আমি বলতে পারি, আমরা ভাল খেলার চেষ্টা করবো।তিনি আরও বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ হবে টস। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত। আমাদের যদি প্রথমে বোলিং করতে হয়, আমরা ভাল বোলিং করার চেষ্টা করবো এবং আমাদের যদি প্রথমে ব্যাট করতে হয়, আমরা ভাল করার চেষ্টা করবো। টস ভাগ্য যদি আমাদের পক্ষে থাকে, তাহলে সেটি ভালই হবে। যদি না-ও হয়, তারপরও আমাদের কোন সমস্যা নেই।সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ টেসে্েট মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। এরমধ্যে ১৩টিতে জয়, মাত্র একটিতে হার এবং তিনটি ড্র করেছে নিউজিল্যান্ড।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, সাদমান ইসলাম, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, কাজী নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, শাহাদাত হোসেন দিপু ও হাসান মুরাদ।
নিউজিল্যান্ড দল : টিম সাউদি (অধিনায়ক), টম ব্লাডেল (উইকেটরক্ষক), ডেভন কনওয়ে, কাইল জেমিসন, টম লাথাম, ড্যারিল মিচেল, হেনরি নিকোলস, আজাজ প্যাটেল, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি, কেন উইলিয়ামসন, উইল ইয়ং ও নিল ওয়াগনার।