আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ার একটি উচ্চ আদালত গত ২৩ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার জাপানকে যুদ্ধকালীন জোরপূর্বক যৌন দাসত্বের শিকার ১৬জন নারীর প্রত্যেককে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নিম্ন আদালতের দেয়া মামলা খারিজের রায়কে উচ্চ আদালত বাতিল করে এই রায় ঘোষণা করেন। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ভুক্তভোগীদের ‘যৌন দাসত্বের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়েছিল।২০২১ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, নারীরা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী নয়। টোকিওর জন্য ‘সার্বভৌম অনাক্রম্যতা’ উল্লেখ করে রায় দেয়, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি মেনে নেয়া একটি কূটনৈতিক ঘটনার কারণ হতে পারে।’কিন্তু সিউল হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার এএফপি’র দেখা একটি আদালতের নথি অনুসারে রায় দিয়েছেন ‘অবৈধ যৌনাচারের ক্ষেত্রে সার্বভৌম অনাক্রম্যতাকে সম্মান করা যুক্তিসঙ্গত নয়।’আদালত রায়ে নির্দেশ দিয়েছেন অভিযোগকারীদের প্রত্যেককে প্রায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।আদালত বলেছেন, ভুক্তভোগীদের ‘যৌন দাসত্বের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়েছিল।’হাইকোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, একারণে তারা ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে এবং ‘যুদ্ধোত্তর স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেনি।১৬ জন বাদীর একজন লি ইয়ং-সু (৯৫) ভূক্তভোগী আদালত ভবন থেকে বেরিয়ে আসার সময় আনন্দে হাত নেড়ে সাংবাদিকদের বলেছেন,‘আমি আজ খুবই কৃতজ্ঞ।’ আমি ভুক্তভোগীদের ধন্যবাদ জানাই কারণ,সুদীর্ঘকাল আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত রায় পেয়েছেন।মূলধারার ইতিহাসবিদরা বলছেন, বেশিরভাগ দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনসহ এশিয়ার অন্যান্য অংশ থেকে ২ লক্ষ নারী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানী সৈন্যদের যৌনদাসী তথাকথিত আরামদায়ক নারী হতে বাধ্য হয়েছিল।ইস্যুটি দীর্ঘকাল ধরে সিউল এবং টোকিও’র মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বিপর্যস্ত করেছে, যা ১৯১০ এবং ১৯৪৫ সালের মধ্যে কোরীয় উপদ্বীপকে উপনিবেশ করেছিল।প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের রক্ষণশীল দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে ক্রমবর্ধমান সামরিক হুমকির মোকাবিলায় যৌথভাবে টোকিও’র সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু, জাপান সরকার অস্বীকার করে এটি যুদ্ধকালীন অপব্যবহারের জন্য সরাসরি দায়ী। একই কথা জাপান বারবার বলে আসছে, ধর্ষণের শিকার নারীরা বেসামরিক লোকদের দ্বারা নিয়োগ করা হয়েছিল এবং সামরিক পতিতালয়গুলো বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত হয়েছিল।