কিছু ব্যাংকের কাছে ডলার সংকট থাকলেও সার্বিকভাবে দেশে ডলারের সংকট নেই।
বেশিরভাগ ব্যাংকের কাছেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার রয়েছে। এসব বিবেচনায়
ব্যাংকগুলো ডলারের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ
ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।তিনি জানান, বাফেদা রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও আমদানি সব ক্ষেত্রেই ডলারের দাম
৫০ পয়সা কমিয়েছে। এতে করে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের টাকার মান বাড়বে।
যেটা এতদিন ছিল উল্টো। আমদানি কমে যাওয়ার কারণে ডলার চাহিদা কমে এসেছে এবং
আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বিল পরিশোধের চাপ একেবারে কমে আসবে বলে
তিনি মনে করেন ।বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক
সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। দেশের ডলার সংকট নিরসনে গৃহীত নানা
পদক্ষেপের বিষয়ে জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।সাংবাদিকদেরে এক প্রশ্নের উত্তরে মেজবাউল হক জানান, বেশিরভাগ ব্যাংকের
কাছেই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ডলার আছে। পক্ষান্তরে সংকটেও রয়েছে কিছু
ব্যাংক। এসব ব্যাংকের গ্রাহক চাইলে চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র খুলতে পারছেন না।
তাই তারা বাধ্য হয়ে অন্য ব্যাংকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। কতগুলো ব্যাংক সংকটে
আছে জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, ২১ ব্যাংকের ডলার সংকটে আছে। এর বিপরীতে ৩৯
ব্যাংকের কাছে পর্যাপ্ত ডলার মজুত রয়েছে ।রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের
রিজার্ভ থেকে সরকার তার প্রয়োজনে ডলার নেয়। প্রয়োজন হলে দেশের স্বার্থে
সেটা দিতে হয়। বন্ধ করার কোন সুযোগ নেই।তিনি বলেন, দেশের ডলার খরচের মূল খাত দুইটি। আমদানি মূল্য পরিশোধ করা এবং
অন্যটি সেবামূল্য পরিশোধ। দুই জায়গাতে আমরা চাহিদা কমাতে সক্ষম হয়েছি।
ইতোমধ্যে আমাদের ডলার পরিশোধের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে।তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ
করেছি। পাশাপাশি এখন দীর্ঘমেয়াদি ঋণপত্র খোলার হার কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা
এখন যেসব ঋণপত্র খুলে তার বেশিরভাগই তাৎক্ষণিক। তাই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই
ডলার সংকটের পাশাপাশি দেশের মূল্যস্ফীতি ও নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা
প্রকাশ করেন তিনি।গতকাল বুধবার প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা করে মূল্য কমিয়ে আমদানিতে ১১০ টাকা ৫০
পয়সা এবং রপ্তানি ও রেমিট্যান্স ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের মধ্যস্থতায় বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও
বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদার যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত
হয়।