জীবনযাত্রার চড়া ব্যয় মেটাতে সঞ্চয়ে হাত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তাই অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির তুলনায় বেড়েছে উত্তোলনের পরিমাণ। ফলে সরকারের নিট ঋণ কমেছে এক হাজার কোটি টাকার ওপরে। বিশ্লেষকরা বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বছর শেষে ব্যর্থ হতে পারে সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা।শাহিন সুলতানা নামে এক গ্রাহক বলেন, আমি আর্থিক খাতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা কর্পোরেশনে চাকরী করি। ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ১৯৯৪ সালে কেনা হয় ১০ হাজার টাকার সঞ্চয়পত্র। টানা ত্রিশ বছর এই বিনিয়োগ ধরে রাখতে পারলেও এখন তা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী নিম্ন ও মধ্যপর্যায়ের কর্মজীবীদের বেতন দিয়ে খরচ চালানো খুবই কষ্টকর। আমার ৩ সন্তানের পড়ালেখা ও সংসারের খরচ চালানোর জন্য এখন বাধ্য হয়ে সঞ্চয়টি ভাঙতে হচ্ছে।সরকারি চাকরিজীবী রত্না চাকমা বলেন, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ধরে রেখেছি টানা দশ বছর। কিন্তু সম্প্রতি এই পদ্ধতিতে নানা নিয়ম-কানুন যুক্ত হয়েছে। তাই আমি এই অর্থ উত্তোলন করে ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করতে চেষ্টা করব।জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর হিসাবনুযায়ী, গ্রাফিক্স চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে বিনিয়োগ হয়েছে ২১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। আর একই সময়ে উত্তোলন হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ সরকারকে ঋণ নেয়ার বদলে মূল টাকা ও মুনাফা বেশি ফেরত দিতে হয়েছে এক হাজার কোটি টাকার বেশি।তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. মির্জা আজিজ বলেন, অতিমাত্রায় মূল্যস্ফীতির ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান নিচে চলে যাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয়সহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই জীবনযাত্রার মান নূন্যতম পর্যায়ে ঠিক রাখতে বাধ্য হয়ে তারা তাদের সঞ্চয় ভাঙছে।চলতি অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা আছে সরকারের।