গত বছর ইংল্যান্ডে পুনর্ব্যবহারের (রিসাইক্লিং) ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ পারফর্মিং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে টাওয়ার হ্যামলেটসের নাম উঠে এসেছিল। তবে অবকাঠামো উন্নয়ন, লক্ষ্যভিত্তিক কমিউনিটি সম্পৃক্ততা এবং পুনর্ব্যবহার বা রিসাইকেল সহজ ও সুবিধাজনক করতে চালু করা একাধিক পাইলট প্রকল্পের ফলস্বরূপ এবার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে কাউন্সিল।
জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ - এই তিন মাসে বরোর পুনর্ব্যবহার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯.৯%, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৮২ শতাংশ পয়েন্ট বেশি। একই সময়ে রিসাইক্লিং দূষণ অর্থাৎ পুনর্ব্যবহারের বিনে ভুল জিনিস ফেলার হার নেমে এসেছে ২৩.৩৬% এ। এটি ২০২৫/২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ২.৯৩ শতাংশ পয়েন্ট কম।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, জুলাই মাসের পরিস্থিতি, যখন দূষণের হার কমে দাঁড়ায় ২১.৬৯% এ - বহু বছরের মধ্যে অর্জিত সর্বনিম্ন হার। যা ইঙ্গিত দেয়, পুনর্ব্যবহার সুবিধার উন্নয়ন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা কার্যকর হচ্ছে।
এই অগ্রগতি টাওয়ার হ্যামলেটসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গত বছরই বরোটি দেশের সবচেয়ে খারাপ পারফর্মিং কর্তৃপক্ষ হিসেবে সমালোচিত হয়েছিল। সর্বশেষ পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে - সুনির্দিষ্ট বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং সহযোগিতামূলক কাজ ফল দিতে শুরু করেছে।
যে পদক্ষেপগুলো বদলে দিচ্ছে চিত্র
কাউন্সিল সাম্প্রতিক সময়ে পুনর্ব্যবহার ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন এনেছে। এর মধ্যে রয়েছে -
১,৯৫০টি ফ্ল্যাট ব্লকের রিসাইকেল (পুনর্ব্যবহার) সুবিধা উন্নয়ন, স্পষ্ট সাইনেজ ও বাড়তি রিসাইক্লিং বিন সক্ষমতা নিশ্চিত করা।
নতুন পাইলট উদ্যোগ, যেমন আলাদা কার্ডবোর্ড সংগ্রহ, চারটি রাউন্ডে একবার ব্যবহারযোগ্য রিসাইক্লিং ব্যাগ বিতরণ, এবং দোকানের ওপরের ফ্ল্যাটগুলোর জন্য ট্রায়াল সার্ভিস।
কমিউনিটি সম্পৃক্ততা কার্যক্রম, যার মাধ্যমে স্কুল, মসজিদ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সংগঠনের সঙ্গে সেশন ও কর্মশালার মাধ্যমে ৪,০০০ এরও বেশি বাসিন্দাকে সচেতন করা হয়েছে।
ফাইভ এস্টেটস পাইলট প্রকল্প, যা কাউন্সিল–পরিচালিত সব বাসা-বাড়িতে সেরা চর্চা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে।
এছাড়া কাউন্সিল পুনর্ব্যবহার বিষয়ে জনসচেতনতা জোরদার করতে সমন্বিত যোগাযোগ পরিকল্পনা চালু করেছে। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, সৃজনশীল ডিজিটাল কনটেন্ট, নিম্ন-কার্যকারিতা এলাকাগুলোতে ছাপানো উপকরণ বিতরণ, মিডিয়া ভিজিট এবং রিসাইক্লিং চ্যাম্পিয়ন নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করা - যার সদস্য এখন ১৩৩ জন।
পরিবেশ ও জলবায়ু জরুরি অবস্থা বিষয়ক ক্যাবিনেট সদস্য, কাউন্সিলর শফি আহমেদ বলেন, “এই ফলাফল অত্যন্ত উৎসাহজনক। আমাদের বিনিয়োগ ও সম্পৃক্ততার প্রচেষ্টা সফল হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং উন্নত রিসাইক্লিং সুবিধার পাশাপাশি বাসিন্দাদের অংশগ্রহণও বেড়েছে। তবে কাজ এখনও অনেক বাকি।”
তিনি আরও বলেন, “পরবর্তী ধাপে আমরা দূষণের হার ২০শতাংশের নিচে নামানো, সফল পাইলট প্রকল্পগুলো বরোজুড়ে সম্প্রসারণ এবং সব বাড়িওয়ালাদের সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বজায় রাখতে বাধ্য করার বিষয়ে কাজ করব।
২০২৭ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে বরোজুড়ে খাদ্য বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা চালুর প্রস্তুতিও চলছে, যা পুনর্ব্যবহারের হার আরও বাড়াবে।”
“বাসিন্দাদের অংশগ্রহণই পরিবর্তনের চালিকা শক্তি” - মেয়র লুফুর রহমান
এক্সিকিউটিভ মেয়র লুফুর রহমান বলেন, “একটি পরিচ্ছন্ন ও সবুজ টাওয়ার হ্যামলেটস গড়ে তোলা আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। যে অগ্রগতি হয়েছে, তা সন্তোষজনক। বিশেষ করে যেসব বাসিন্দা প্রথমবারের মতো পুনর্ব্যবহার শুরু করেছেন, তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।”
তিনি আরও জানান, “আমরা সেবা উন্নত করছি এবং সচেতনতা বাড়াতে বিনিয়োগ করছি, যাতে রিসাইকেল টাওয়ার হ্যামলেটসে বসবাস, কাজ বা অধ্যয়নরত সবার জন্য স্বাভাবিক আচরণে পরিণত হয়।”








