কমিউনিটি ১৭ নভেম্বর ২০২৫

স্মার্ট ডিজাইনে সাশ্রয়ী আবাসন, নতুন স্ট্যান্ডার্ড টাওয়ার হ্যামলেটসে

post

লন্ডনের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ ও আবাসন সংকটপূর্ণ এলাকা টাওয়ার হ্যামলেটসে সাশ্রয়ী ভাড়ার (এফোর্ডেবল রেন্ট) বাড়িতে এখন বিলাসবহুল জীবন যাপনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক ভাড়া ও সাশ্রয়ী মূল্যের বাসস্থানগুলোতে এখন শুধু চার দেয়ালই নয়, যোগ হচ্ছে ইনডোর খেলার এলাকা, টিভি লাউঞ্জ, প্রাইভেট সিনেমা হল, এমনকি নিজস্ব বোলিং অ্যালিও। সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ যাতে জীবনযাপনের পুরো স্বাদ নিতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই এ অসাধারণ পদক্ষেপ।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের হাউজিং রেজিস্টারে প্রায় ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরের জন্য তালিকাভুক্ত আছেন। আর নির্মাণের জন্য এই বরায় জায়গার সংকট অত্যন্ত তীব্র। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অথরিটি এবং প্রাইভেট ডেভেলপাররা এখন জোর দিয়েছেন উঁচু এবং স্মার্টলি ডিজাইনড বিল্ডিং নির্মাণের উপর, যার ভেতরে থাকবে পরিবারবান্ধব সব সুযোগ - সুবিধা।

এমনই দুইটি প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ মেয়র লুৎফুর রহমান এবং ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর মাইয়ুম তালুকদার। আইল অব ডগস -এ অবস্থিত এই প্রকল্পগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে, পাবলিক - প্রাইভেট পার্টনারশিপ এর মাধ্যমে কীভাবে উন্নতমানের সাশ্রয়ী আবাসন তৈরি করা সম্ভব।

এই দুটি উন্নয়ন প্রকল্প একসাথে মোট ১২০টি নতুন বাসস্থান সরবরাহ করছে। এগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সাশ্রয়ী ভাড়ার আবাসনের জন্য সংরক্ষিত, যার মধ্যে ৪০টি ইউনিট সাশ্রয়ী ভাড়ায় পাওয়া যাবে; এবং এই সংখ্যাটির অর্ধেকই পরিবার-উপযোগী (৩ বা তার বেশি শোবার ঘর)। একটি প্রজেক্টে ১৯টি ফ্যামিলি সাইজ ঘর এবং ৫টি হুইলচেয়ার প্রবেশ-নির্গমন উপযোগী ঘর রয়েছে।

টাওয়ার হ্যামলেটসের এক্সিকিউটিভ মেয়র লুৎফুর রহমান, সাইট ভিজিটের পর বলেন, “টাওয়ার হ্যামলেটস একটি ছোট বরো। আমরা চারপাশে প্রসারিত (সাইড ওয়েজ এক্সপ্যান্ড) হতে পারি না, কিন্তু আমরা নিশ্চয়ই উঁচু করে গড়তে (আপওয়ার্ডস বিল্ড) পারি। আমাদের উচ্চ ভবন নির্মাণ ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই, কিন্তু সেগুলোর ভেতরে ফ্যামিলি—ফ্রেন্ডলি অ্যামেনিটি স্পেস অর্থাৎ পরিবারগুলোর চাহিদা মেটানোর মতো সুযোগ - সুবিধার স্থান থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমি যে উন্নয়ন গুলো দেখেছি তা দুর্দান্ত এবং স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে মডার্ন লিভিং অর্থাৎ আধুনিক জীবনযাপন কী।”

ওয়ান থেমস কীঃ ৪৮ তলার নতুন মাইলফলক

চ্যালগ্রোভ প্রোপার্টিজ লিমিটেড (সিপিএল) এবং পপলার হারকার যৌথ উদ্যোগে নির্মিত ওয়ান থামস কে প্রকল্পে অ্যাফর্ডেবল রেন্ট -এর জন্য ৪০ টি এবং শেয়ারড ওনারশিপ—এর জন্য ৩১টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। অ্যাফোর্ডেবল রেন্ট -এর ইউনিটগুলোর অর্ধেকই থ্রি-বেডরুম বা তার বেশি সাইজের, অর্থাৎ ফ্যামিলি—সাইজড। ৭১ টি অ্যাপার্টমেন্টই একটি ৪৮ তলা বিশিষ্ট স্ট্রাইকিং টাওয়ারে অবস্থিত এবং প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্টে একটি করে ব্যক্তিগত আউটডোর ব্যালকনি আছে।

এই ডেভেলপমেন্টটি সোশ্যাল অ্যান্ড অ্যাফর্ডেবল হাউজিং -এ (সামাজিক ও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনে) নতুন বেঞ্চমার্ক বা মাপকাঠি স্থাপন করেছে। বাসিন্দারা বিভিন্ন ধরনের কমিউনাল সুবিধা ভোগ করছেন, যার মধ্যে রয়েছে একটি উন্মুক্ত শিশুদের খেলার এলাকা, বসার ব্যবস্থাসহ বাগান, একটি সিনেমা রুম এবং এমনকি একটি বোলিং অ্যালি। এই শেয়ার্ড ফ্যাসিলিটিজ বাসিন্দারা বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারেন এবং এডভান্স বুকও করতে পারেন।

চ্যালেগ্রোভ প্রোপার্টিজ লিমিটেড (সিপিএল) — এর পক্ষে রামি আতাল্লাহ, বলেন, “পপলার হারকার সাথে একত্রে কাজ করে ওয়ান থামস কে বাস্তবায়ন করতে পেরে আমরা গর্বিত। আমাদের লক্ষ্য ছিল উচ্চমানের বাড়ি তৈরি করা যা বাসিন্দাদের জীবনকে উন্নত করে এবং বৃহত্তর কমিউনিটির জন্য ইতিবাচকভাবে অবদান রাখে। এ ধরনের উন্নয়ন গুলো দেখায় যে কীভাবে চিন্তাশীল নকশা এবং সহযোগিতা স্থানীয় আবাসনের চাহিদা পূরণ করতে পারে, পাশাপাশি এমন স্থান তৈরি করতে পারে যাকে মানুষ গর্বের সাথে বাড়ি বলে ডাকে।”

 

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner