বাংলাদেশ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে

post

নিউজ ডেস্ক
টিভি নাইনটিন অনলাইন

ঢাকাঃ
আর মাত্র তিনদিন পরেই শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বইছে উৎসবের আমেজ। চারদিকে চলছে শেষমুহূর্তের পূজার প্রস্তুতি।বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে। আগামী ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের।এদিকে দুর্গপূজাকে কেন্দ্র করে অনেকেই নতুন পোশাক কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত, প্রতিমাশিল্পীরা প্রতিমা রং করতে ব্যস্ত, আবার কেউ পূজামণ্ডপ তৈরি, আলোকসজ্জাসহ পূজার আনুষঙ্গিক আয়োজনে ব্যস্ত।সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা যায়, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, রমনা কালীমন্দির, আজিমপুর সরকার কলোনী পূজা মণ্ডপ, জয়কালী মন্দির, শাঁখারিবাজারে শ্রী শ্রী শনিদেবের মন্দিরে পুরোদমে চলছে আলোকসজ্জা ও সাজসজ্জার কাজ। ইতোমধ্যে মণ্ডপগুলো রং করাসহ পূজার সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে তা সম্পূর্ণ হতে এখনও দুই-এক দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

সরেজমিনে রাজধানীর রমনা কালীমন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরি এবং রং করার কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে সেখানকার প্রতিমা শিল্পী রতন পাল বলেন, প্রতিমা রং করার কাজ প্রায় শেষ। এখন ফিনিশিং দেওয়া হচ্ছে। শাঁখারি বাজারে শনিদেবের মন্দিরে সাজসজ্জার দায়িত্বে থাকা সবুজ মিয়া বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে সাজসজ্জার কাজ করছি। আরও এক-দুদিন লাগবে কাজ শেষ করতে। বাকি কাজ প্রতিমা এলে করা হবে।পুরান ঢাকার শ্রীধর চক্র জিঁউ বিগ্রহ মন্দিরের সামনে মণ্ডপের কাজ করছে ‘সুব্রত ডেকোরেশন’। পূজার সাজসজ্জা ও ডেকোরেশনের বিষয়ে সুব্রত ডেকোরেশনের মালিক সুদীপ্ত সেন জানান, বিগত প্রায় ৩৫ বছর ধরে পুরান ঢাকায় পূজামণ্ডপ তৈরি ও ডেকোরেশনের কাজ করেন তিনি।তিনি বলেন, আগে এত আধুনিকতা ছিল না। এক কাপড় দিয়ে দুই তিন পুজোর প্যান্ডেল তৈরি করতাম। মাইকের প্রচলন ছিল। এখন সাউন্ড বক্স ছাড়া চলেই না। এখন পুজোর গেট থেকে শুরু করে ভেতরের প্যান্ডেল সব কিছু বৈচিত্র্যময় হতে হয়। এক ডিজাইন দ্বিতীয়বার চলে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ডেকোরেশন সিস্টেমও আধুনিক করতে হচ্ছে।লোকনাথ পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী, ২৯ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাষ্টমী ও ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।এবছরে দেবী দুর্গার গজে (হাতি) আগমন এবং দোলায় (পালকি) গমন হবে। গজে দেবীর আগমনকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। যা শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলা বসুন্ধরার প্রতীক। অন্যদিকে দোলায় গমন মহামারী বা মড়কের ইঙ্গিত বহন করে, যা একটি অশুভ সংকেত। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বাসসকে বলেন, সারাদেশে এই বছর দুর্গাপূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে। এ বছর সারাদেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এরমধ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব দেবন্দ্র নাথ উরাঁও বাসসকে জানিয়েছেন, এ বছর অন্তর্র্বর্তী সরকার দুর্গাপূজার জন্য সব মিলিয়ে ৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে।দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে।এদিকে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক বিষয়াদি নিবিড় পরিবীক্ষণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner