নিউজ ডেস্ক
টিভি নাইনটিন অনলাইন
ঢাকাঃ দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই দাবি জানান। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা-বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।তিনি বলেন, আমরা অস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আর বিলম্ব নয়। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের স্যারের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগের মধ্যে নির্বাচনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনকে যে রিকোয়েস্ট করেছেন। এখন আমরা চাই, অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।নির্বাচন বিলম্বে স্বৈরাচার লাভবান হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আপনারা বলেন, পিআর না হলে নির্বাচনে যাব না। আপনি যে এই কথাটি বলেন, এই কথাটির ইমপ্লিকেশন চিন্তা করেছেন। আজকে যদি নির্বাচন প্রলম্বিত হয়, নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, নির্বাচন যদি যথাসময়ে না হয় তাহলে লাভ কাদের? লাভ হচ্ছে, পতিত স্বৈরাচারে রেখে যাওয়া যে সমস্ত এই সুবিধাভোগীরা আজকে প্রশাসনে বলেন, বিচারালয়ে বলেন, ব্যবসা কেন্দ্রে বলেন, সর্বত্র ছড়িয়ে আছে তাদের। তারা দেশে এবং দেশের বাইরে বসে তাদের নেত্রী যে ষড়যন্ত্র করছে নির্বাচন হতে দিব না নির্বাচন এটা করতে দিব না অর্থাৎ এক ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে লাভ কাদের? লাভ হচ্ছে পলায়নকৃত স্বৈরাচারের। আপনারা যারা বুঝে না বুঝে বিভিন্ন দাবি তুলে আজকে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চান তারা কি প্রকারান্তরে স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করছেন কিনা সেইটি কি বিবেচনা করেছেন?
তিনি বলেন, আজকে যদি স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করেন এবং আপনাদের কর্মসূচির কারণে যদি আজকে কোন কারণে এই দেশের নির্বাচন হবে কি হবে না… এটি নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আশঙ্কা জমে তাহলে লাভবান হবে পলায়নকৃত স্বৈরাচার। এর জন্য কি আপনারা ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই করেছিলেন? আমি এখনো বলব, ভাইয়েরা বুঝার চেষ্টা করেন… ক্রীড়ানকের ভূমিকায় দয়া করে লাফ দিয়ে পড়বেন না।দেয়ালের লিখন পড়ুন উল্লেখ করে জাহিদ বলেন, দয়া করে দেয়ালের লিখন পড়তে শিখুন, রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করুন। কোন অবস্থাতেই গায়ের জোরে কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। গায়ের জোর থাকা ভালো। গায়ের জোর কোন পারপাসে আপনি ব্যবহার করবেন সেটি আপনার মনে রাখতে হবে। গায়ের জোর যদি আপনি ন্যায়ের জন্য করেন আপনাকে মানুষ সাধুবাদ জানাবে, গায়ের জোর যদি আপনি অন্যায়ের জন্য ব্যয় করেন মানুষ কিন্তু আপনাকে সাধুবাদ জানাবে না। তখন মানুষ আপনাকে বলবে আপনি উগ্রপন্থা অবলম্বন করছেন।পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, যারা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলেন….গতকাল দেখলমান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, পিআর পদ্ধতি হলে সত্যিকার অর্থে ধ্বংসের দিকে দেশ এগিয়ে যাবে….। বাংলাদেশ কি এটা বহন করতে পারবে? তিনদিন পরপর সরকার পরিবর্তন হবে, ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হবে ক্যান ইউ থি অফ ইট? বাংলাদেশের মানুষ জানে, সে কাকে ভোট দিতেছে? কে তার প্রতিনিধি? কে তার জন্য কাজ করবে? এলাকার জন্য উন্নয়নের জন্য কাজ করবে? মানুষ তাকে দেখতে চায়ভ মানুষের মেন্টাল মেকআপ হচ্ছে এই ধরনের।তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই আপনার পকেট থেকে আপনি ১০ টা আর সুব্রত চৌধুরী সাহেবের পকেট থেকে ১০টা টা….নাম দিয়ে দেবেন আর মানুষ আপনাদেরকে ভোট দিবে… মানুষ তাদেরকে দেখলো না জানলো না বুঝলো না কিচ্ছু না তারা এখন আপনার আমার প্রতিনিধি তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না তারা আজকে সিঙ্গাপুর কালকে ঢাকা পরশুদিন দিনাজপুর তারপরের দিন চট্টগ্রাম এবং তারা সারা বাংলাদেশ। এটার জন্য বাংলাদেশের মানুষ কী আদৌও প্রস্তুত। প্রস্তুত নয়। বাংলাদেশের মানুষ এই পিআর সিস্টেম বুঝে না। কোন অবস্থাতেই এমন কোন আচরণ মানুষের উপর মানুষের সাথে করা উচিত না যেটিতে মানুষ বিভ্রান্ত হয় এবং বিভ্রান্ত হলে যেটি দেশের জন্য দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য, দেশের অস্তিত্বের জন্য সত্যিকার অর্থে মহাবিপদ ডেকে আনবে।আসুন আমরা জনগণের কাছে যাই উল্লেখ করে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, আমরা বলতে চাই, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচনই একমাত্র পথ। এখন সমস্যাটা হয়ে গেছে, আমরা সবাই বিচার মানি তাল গাছটা আমার… এটা আমাদের একটা মানসিকতা হয়েছে আরকি। দেশের স্বার্থে আসুন, সবাই মিলে আমরা জনগণের কাছে যাই। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই আগামী দিনে সিদ্ধান্ত নিবে এই দেশের শাসন ব্যবস্থা কিভাবে চলবে? দেশ কিভাবে পরিচালিত হবে? তখন ওখানে(সংসদ) আলোচনা করা যাবে, ডিবেট করা যাবে…পরবর্তী নির্বাচন কিভাবে আপনারা করবেন। যেটা জনগণ চাইবে, যেটা জনগণ মানবে, যেটা জনগণ ভালো মনে করবে সেটাকে জনগণ গ্রহণ করবে।তিনি বলেন, জনগণের প্রতি আস্থা রাখুন। জনগণকে অনাস্থায় নিলে কি পরিণতি হয় ৩৬ জুলাই দেখেছেন। কাজেই দয়া করে সেটির পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করবেন না।সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে ও জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় গণফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহবুব হোসেন, নজরুল ইসলাম, উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্মী, আবুল কাশেম চৌধুরী, গাজী মোশাররফ হোসেন, আজহারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি এজেডএম জাহিদ হোসেনের
