বাংলাদেশ ০৯ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধি: দরকষাকষি, লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ রপ্তানিকারকদের

post

নিউজ ডেস্ক
টিভি নাইনটিন অনলাইন

ঢাকাঃ
বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে কিছুটা উদ্বেগ দেখা দিয়েছে রপ্তানিকারকদের মধ্যে। তারা বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ মহলকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষি এবং লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ তাদের।এতদিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ওপর শুল্কহার ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ, এখন তা দ্বিগুণের বেশি বাড়াতে যাচ্ছে দেশটি। এই ব্যাপক শুল্ক বাড়ানোর কারণে বিশেষ করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করেন দেশের ব্যবসায়ী নেতারা। তবে চীন ও ভারতের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নেয়, তার ওপর বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতি নির্ভর করছে বলে মনে করেন রপ্তানিকারকরা। জানতে চাইলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন সমকালকে বলেন, বুধবার শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বৈঠক আছে। সেখানে কী সিদ্ধান্ত হয়, তার পর ধারণা করা যাবে রপ্তানিতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে। তবে বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছি। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৩ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বড় একক বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পাল্টা শুল্ক আরোপে বাংলাদেশের রপ্তানিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে– জানতে চাইলে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, প্রথম দফায় যখন শুল্ক আরোপের ঘোষণা করা হয়, তখনই সরকারকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধান করার অনুরোধ জানিয়েছেন রপ্তানিকারকরা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে আলোচনা করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আজ বুধবার তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিষয়টি আলোচনার জন্য সময় চেয়েছেন। বৈঠকে ওয়াশিংটনকে রাজি করাতে লবিস্ট নিয়োগের জন্য অনুরোধ জানাবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা নিজেই যেন সরাসরি সম্পৃক্ত হন, সে ব্যাপারেও অনুরোধ জানানো হবে।পাল্টা শুল্কে রপ্তানিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে বলে জানান বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে এহসান শামীম। তিনি বলেন, এখনই বাংলাদেশের ভয়ের কোনো কারণ নেই। তবে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেবে, ভারতের সঙ্গে কী শর্তে চুক্তি করবে এবং ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে কিনা– এই তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের রপ্তানির গতিবিধি।তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনে অতিরিক্ত শুল্ক বসায় এবং ভারতকে ছাড় না দেয়, তাহলে বাংলাদেশের ভয় কম থাকবে। এ ছাড়া ব্রিকসের দেশগুলোর ওপর যদি ১০ শতাংশ অতিরিক্ত পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তাতেও বাংলাদেশের সমস্যা হবে না বরং ভালো হবে। কারণ, এসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতা না হলে দেশটি ভিয়েতনাম থেকে আমদানি কয়েক গুণ বাড়াবে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করার মতো সেই সক্ষমতা নেই ভিয়েতনামের। ফলে চীন, ভারত ও ব্রিকসের রপ্তানি আদেশগুলো বাংলাদেশেও স্থানান্তরিত হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রপ্তানিতে শুল্ক ৩৫ শতাংশ আরোপ করা হলেও মোটা দাগে সমস্যা হবে না। বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি বলেন, শুল্ক আরোপ ঠেকাতে সরকারের প্রতি তাঁর পরামর্শ হলো, ট্রাম্প প্রশাসন চীন ও ভারতের ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে খোঁজখবর রাখতে হবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষির বিষয়টিও চালিয়ে যেতে হবে।

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner