নিউজ ডেস্ক
টিভি নাইনটিন অনলাইন
ঢাকাঃ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রদল নেতা‘ছুরিকাঘাতে‘ নিহত হয়েছেন।মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকের এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে পড়তেন।২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী এফ রহমান হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।তার বন্ধুরা বলেন, ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত সাম্য এফ রহমান হলের ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, এক ছাত্র খুন হয়েছেন। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্ধুরা সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক বলেন, রাতে বন্ধুরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। এরপর চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।তার ডান পায়ে ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।হাসপাতালে নিহতের সহপাঠী আশরাফুল ইসলাম রাফি বলেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সাম্য থাকতেন এফ রহমান হলে।তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায়।ঘটনার বিবরণ দিয়ে রাফি ও তার আরেক বন্ধু আবাবিল আহমেদ বিশাল বলেন,রাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মুক্ত মঞ্চের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন সাম্য। এসময় অন্য একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে তার মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং ধস্তাধস্তি হয়।এক পর্যায়ে সাম্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের উরুতে আঘাত করে পালিয়ে যায় ওই মোটরসাইকেলের আরোহী।পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে তার মৃত্যু হয়।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্যার এ এফ রহমানের হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণ বলেন, ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত করা হয়েছে তাকে।এতে তার মৃত্যু ঘটেছে।সাম্য নিহত হওয়ার খবরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিড় করেছেন তার সহপাঠীরা।
বিক্ষোভ মিছিল
সাম্য খুন হওয়ার প্রতিবাদে হাসপাতালে জড়ো হওয়া তার বন্ধু,সহপাঠী ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে আসে।রাত পৌনে ২টার দিকে স্যার এফ রহমান হলের সামনে থেকেও বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।পরে সব মিছিল ভিসি চত্বরে এসে জড়ো হয়।এসময় শিক্ষার্থীরা 'আমার ভাই কবরে,খুনি কেন বাহিরে', 'আমার ভাই মরলো কেন,প্রশাসন জবাব দে', 'বিচার বিচার বিচার চাই,সৌম্য হত্যার বিচার চাই' সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে।পরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।পরে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন।তখন অনেকে ভিসির বিরুদ্ধেও 'শেইম-শেইম বলে স্লোগান দিতে থাকে।এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দেন উপাচার্য।পরে মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গিয়ে শেষ হয়। মাঝপথে মিছিলে যোগ দেন প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ।মিছিল শেষে,উপাচার্য ও প্রক্টর নিহত শিক্ষার্থীকে দেখতে ভেতরে ঢুকতে চাইলে শিক্ষার্থীদের বাধায় ঢুকতে পারেননি।এসময় শিক্ষার্থীরা 'অথর্ব প্রক্টর, মানি না মানব না', 'অথর্ব ভিসি-মানি না , মানব না' সহ নানা স্লোগান দেয়।পরে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে হাসপাতাল থেকে অ্যম্বুল্যান্সে করে স্থান ত্যাগ করেন উপাচার্য ও প্রক্টর।এরপর শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে একটা মিছিল নিয়ে যান।এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাবি ছাত্রদল নেতা খুন
