নিউজ ডেস্ক
টিভি নাইনটিন অনলাইন
ঢাকাঃ হজ ও ওমরা যাত্রীদের জন্য মেনিনজাইটিসের (মস্তিষ্কের প্রদাহ) টিকা বাধ্যতামূলক করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। সৌদি আরব সরকারের নতুন নির্দেশনার আলোকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম দেশের সব এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছেন।নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যারা ওমরা বা হজ করতে যাবেন অথবা ভিজিট ভিসায় সৌদি আরব ভ্রমণে যাবেন, তাদের সবার জন্যই এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। সৌদি আরবে ভ্রমণের কমপক্ষে ১০ দিন আগে মেনিনজাইটিসের টিকা নিতে হবে। ভ্রমণের সময় টিকা নেওয়ার সনদ সঙ্গে রাখতে হবে।এতে আরও বলা হয়, এক বছরের নিচের শিশুদের এ টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। কেউ যদি গত তিন বছরের মধ্যে টিকা নিয়ে থাকেন, তাহলে তাকেও সৌদি প্রবেশে নতুন করে টিকা দিতে হবে না।অন্যদিকে, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এ নিয়ম বাস্তবায়নের জন্য সৌদি আরবের সিভিল এভিয়েশন দপ্তর ইতোমধ্যে সব এয়ারলাইন্সকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে। এ টিকা ছাড়াও কয়েকটি দেশের ওমরা যাত্রীদের করোনাভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, পীতজ্বর এবং পোলিওর টিকা নেওয়ার আহ্বান জানায় দেশটির হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়।এ ছাড়া পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও আফগানিস্তানের যাত্রীদের জন্য পোলিও এবং অ্যাঙ্গোলা, কঙ্গো, ব্রাজিল ও নাইজেরিয়ার যাত্রীদের জন্য পীতজ্বরের টিকা বিশেষভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।এর আগে চীনসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আতঙ্ক ছড়ানো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়। এ অবস্থায় ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে ১৩ জানুয়ারি বিশেষ নির্দেশনা জারি করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বিশেষ ওই নির্দেশনায় বলা হয়, সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার নির্দেশনা অনুযায়ী বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সবাইকে এইচএমপিভির বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আপাতত আতঙ্কিত হওয়ার কিছু হয়নি। বিমানবন্দরের যাত্রী, স্টাফ ও দর্শনার্থীদের সবাইকে মুখে মাস্ক রাখা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়েছে। যদি কারো মধ্যে জ্বর, কফ, শ্বাস ছোট হওয়ার মতো এইচএমপিভির লক্ষণ দেখা দেয় সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের হেলথ সার্ভিসে জানাতে হবে।দেশের বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনাকারী দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এবং যেসব দেশে এইচএমপিভির আক্রান্ত রোগী রয়েছে সেসব দেশ থেকে যাত্রী আনার ক্ষেত্রেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্লেনের ভেতর যদি কারো মধ্যে জ্বর ও কফের মতো এইচএমপিভির লক্ষণ দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের হেলথ সার্ভিসে জানাতে হবে।ফ্লাইটে এইচএমপিভির আক্রান্ত রোগী থাকলে তাদের কিভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে সে বিষয়ে এয়ারলাইন্সের ক্রু ও যাত্রীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনাবলি জানার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও চিঠিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা সাতটি নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনাগুলো হলো–
১. শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
২. হাঁচি-কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন।
৩. ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।
৪. আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সম্পন্ন এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
৫. ঘনঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধৌত করুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)।
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না।
৭. আপনি জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন। প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।