বাংলাদেশ ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

মহান বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

post

নিউজ ডেস্ক

টিভি নাইনটিন অনলাইন

ঢাকাঃ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে গৌরবের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙ্গালি জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে এবং নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ৫৩তম বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপ্রতি, প্রধান উপদেষ্টা, দেশ বিদেশের গূরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ পুরো জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।আর এ লক্ষ্যে প্রস্তত করা হয়েছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধ চত্বরে ধোয়া-মোছার কাজ সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষে বাহারি রংয়ের ফুলের চারা রোপন করা হয়েছে। পুরোনো ফুলগাছগুলোর ডালপালা ছাটাইসহ বিভিন্ন সিঁড়িতে ও বিভিন্ন গূরুত্বপূর্ণ স্থানে পরছে রং তুলির আঁচর।রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, সৌধ চত্বরের চারপাশে কয়েকশো টবে শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের ফুল আর পাতা বাহারের গাছ। নিরাপত্তার জন্য ওয়াচ টাওয়ার, উচ্চ মাত্রার সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ডগ স্কোয়াড দিয়ে প্রতিটি স্থান তল্লাশি করছে।১৬ ডিসেম্বর ৫৩তম মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস আর এরপরেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে।

এদিকে বিজয় দিবসের আগেই জাতীয় স্মৃতিসৌধের সব ধরনের কাজ শেষ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। স্মৃতিসৌধের ফটক থেকে মিনার পর্যন্ত পুরো এলাকা ধুয়েমুছে চকচকে করা হয়েছে। সৌধ চূড়া পরিষ্কার করার কাজ শেষ। লেকও পরিষ্কার করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে লাল-সবুজ আলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। এখন চলছে নবম পদাতিক ডিভিশনের নেতৃত্বে তিন বাহিনীর সদস্যরা কুচকাওয়াজের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।এ ব্যাপারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, মহান বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দসহ লাখো মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এজন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধকে একমাস যাবৎ আমাদের প্রায় দেড়শো কর্মী ও দুটো প্রেশার মেশিন দিয়ে ধুয়ে-মুছে পরিস্কার ও রঙ তুলির আঁচড় এবং নানা রঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ডিসেম্বর স্মৃতিসৌধে আগত সকল দর্শনার্থীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ ও যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এখানকার পুলিশ ও আনসার ক্যাম্পকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক অবস্থানে রাখা হয়েছে। আমাদের আশা ১৬ডিসেম্বর সকলেই একটি সুন্দর এবং উপভোগ্য বিজয় দিবস উদযাপন করতে পারবেন।নিরাপত্তার বিষয় তদারকির জন্য সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনে আসেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে ১০ দিন আগে থেকেই নিরাপত্তায় কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকাসহ রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইলে নিরাপত্তাবলয় জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকেই ডিএমপিসহ এ এলাকায় ট্রাফিক কার্যক্রম চালু থাকবে। এ সময় কোনো হুমকি নেই উল্লেখ করে সবাই নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।এদিকে এবার পুলিশের পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানানো হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।এব্যাপারে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নাজমুল হাসান অভি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি আমাদের দলের পক্ষ থেকেও আমাদের প্রতিটি ইউনিটের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যাতে ফ্যাসিবাদের দোসরেরা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে। এবার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের নির্বিঘ্নে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে স্মৃতিসৌধের আনুষ্ঠিকতা সম্পন্ন হবে ইনশা আল্লাহ।

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner