টিকা কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত জনসমাগম এড়াতে অনস্পট নিবন্ধন কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে কৈশোর স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা বিষয়ক এক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা কেন্দ্রগুলোতে ভিড় এড়াতে এবং সুষ্ঠুভাবে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করতে আজ থেকে ‘অনস্পট’ নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। পরে আবারও প্রয়োজন হলে সশরীরে এসে নিবন্ধন করে টিকা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে। আমাদের অনলাইন নিবন্ধনের চেয়ে অনস্পট নিবন্ধনের সংখ্যা বেড়েছে। এদিকে যারা অনলাইনে নিবন্ধন করে টিকা নিতে আসছে, তারা বিভিন্নরকম ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনস্পট নিবন্ধনের কারণে তাদেরকে এসে বসে থাকতে হচ্ছে। বয়স্করাও এসে কষ্ট পাচ্ছেন। তাই আজ থেকে টিকা কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ থাকবে না।
জাহেদ মালেক বলেন, করোনায় আমরা অনেক ভালো আছি। আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ভালো আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় করোনাকালে ৯ মাস কাজ করেছে। করোনাকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজন রাস্তায় কাজ করেছে এবং তারাই আবার মানুষের সমালোচনা-কটাক্ষ শুনেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজন কাজ করেছে বলেই ১৭ কোটি লোকের মধ্যে মাত্র ৮ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে। আমেরিকায় পৌনে ৫ লাখ লোক মারা গেছে। ভারতে পৌনে ২ লাখ লোক মারা গেছে।
করোনার ভ্যাকসিন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বিষয়েও অনেক সমালোচনা করা হয়েছে। অনেকে বলেছেন ভ্যাকসিন আসবেই না বাংলাদেশে, ভ্যাকসিন আসলেও কার্যকরী হবে না। যারা সমালোচনা করেছে এখন তারাই আগে ভ্যাকসিন নিচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে সবকিছুই বৃথা হয়ে যাবে। যদি আমরা করোনা ভাইরাসকে কন্ট্রোল করতে না পারতাম, তাহলে আজকে এখানে আপনারা সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারতেন না। এখানে কোনো মিটিং করতে পারতেন না। ভয়ে আমরা কেউ আসতাম না। মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যেত। হাসপাতালে জায়গা হতো না। রাস্তাঘাটে লোকজন মরে পড়ে থাকত।
কিশোরদের স্বাস্থ্য প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কী করছে, কোথায় যাচ্ছে—এসব বিষয়ে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। কোনকিছুই অতিরিক্ত ভালো না। আমাদের খাবার-দাবারেও ব্যালেন্স ফুড গ্রহণ করতে হবে। শুধু ফাস্টফুড না, সেই সাথে ফলমূল শাকসবজিও খেতে হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা এখন মোবাইলে গেম খেলে। কিন্তু তারা মাঠে যায় না। মাঠের আলো-বাতাস তাদের গায়ে লাগে না। এদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের যেভাবে গাইড করব পরবর্তীতে তারা সেভাবেই গড়ে উঠবে।বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান সময়ের ছেলেমেয়েরা বই পড়েই না। লাইব্রেরিতে যায় না। একটা আইপ্যাডের মধ্যেও ৫০০ বই রাখা যায়। কিন্তু বই পড়তে আমরা ছেলেমেয়েদের দেখি না। এই বিষয়টাও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, যোগ করেন তিনি।রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলিনুর, নিপোর্ট-এর ডিরেক্টর জেনারেল সুশান্ত কুমার সাহা, ইউএসএআইডির জনসংখ্যা, পুষ্টি ও শিক্ষা অফিসের পরিচালক জারজিস সিধওয়া প্রমুখ।